বন্যাকবলিত জামালপুরে জিপিএ-৫ উৎসবে প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। আজ শনিবার সকালে জামালপুরের মির্জা আজম অডিটরিয়ামে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
উৎসবে অংশ নিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ১ হাজার ৫৬৪ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়।
এর আগে সকাল নয়টায় ক্রেস্ট ও নাশতা বিতরণের মধ্য দিয়ে আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সাড়ে আটটার আগেই শিক্ষার্থীরা উৎসবের স্থানে আসতে শুরু করে। একে অপরকে কাছে পেয়ে সহপাঠী ও বন্ধুদের যেন উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। পরস্পরকে জড়িয়ে ধরা, মুঠোফোনে স্মৃতি ধরে রাখতে সেলফি তোলে তারা।
‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছে জিপিএ-৫ উৎসব।
আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই বিকাশ এবং সহযোগিতায় থাকছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বহুব্রীহি, সানকুইক, কনকা-গ্রি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।
অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২০ কিলোমিটার দূর সদর উপজেলা নান্দিনা এলাকা থেকে মেয়ে ইকরা আকন্দকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন মা শেলী খাতুন ও বাবা মো.সুরুজ আলী আকন্দ। শেলী খাতুন বলেন, ‘ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। সকাল সাতটার দিকে অনুষ্ঠানে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। মেয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ায় যেমন খুশি। আজকের অনুষ্ঠানে মেয়ে অংশ নিতে পারায় তার মধ্যে আগামীতে অন্যান্য পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের একটা আগ্রহ জন্ম নেবে। এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ জোগাবে।’
অনুষ্ঠানস্থলে কথা হয় সদর উপজেলার রানাগাছা এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থী জান্নাতের সঙ্গে। সে এবার সদর উপজেলার নান্দিনা নেকজাহান বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে বলল, ‘আমরা দুই বান্ধবী ও পরিবার মিলে ট্রেনে এসেছি। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য খুব চিন্তায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
আয়োজনে গুণীজনের দিকনির্দেশনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলছে। অনুষ্ঠানে জেলার ১০ গুণী শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। পরে অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাদকবিরোধী শপথবাক্য পাঠ করান জামালপুরের মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন, প্রথম আলোর ন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সম্পাদক তুহিন সাইফুল্লাহ।
সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্রেস্ট, ডিজিটাল সার্টিফিকেট, শিখোর পক্ষ থেকে বিশেষ শিক্ষাবৃত্তি, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্ন্যাকস, সানকুইকের ফ্রুট জুস, প্রথম আলো ই-পেপার (তিন মাস) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, প্রথমা ডটকমে অনলাইনে বই অর্ডারে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়, প্রথমা প্রকাশনের বিক্রয়কেন্দ্রে প্রথমা প্রকাশন ও প্র প্রকাশনের প্রকাশিত বইয়ে ৩০ শতাংশ ছাড়, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তার ছয় মাসের প্রিন্ট ভার্সনের সাবস্ক্রিপশনে বিশেষ ছাড়।