শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সমঝোতা হওয়ার পরও খোলেনি গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের পাঁচটি পোশাক কারখানা। এদিকে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন থানায় কারখানা বন্ধ আছে। এ কারণে আজ মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকেরা কারখানায় এলেও পরে ফিরে গেছেন।
এ বিষয়ে কারখানার মহাব্যবস্থাপক কবির আহম্মেদ বলেন, কারখানা খোলার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিল বকেয়া থাকার কারণে কারখানার বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। আজ দুপুরের মধ্যেই কারখানা কবে খোলা হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্ত নোটিশ আকারে শ্রমিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
বকেয়া বেতনের দাবিতে গত শনিবার থেকে টানা তিন দিন প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
গতকাল সোমবার রাতে শ্রম ভবনে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ জন শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএর নেতারা এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সর্বসম্মতিক্রমে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বলা হয়, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বর অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। গ্রুপের কারখানাগুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত খুলে দেবে। এ ছাড়া ৩০ নভেম্বরের আগে কেউ যদি আবার সড়ক অবরোধ করেন, তাহলে টাকা পরিশোধ করা হবে না বলেও জানানো হয় বৈঠক থেকে।
এদিকে শিল্পনগরী গাজীপুরে অন্য সব গার্মেন্টসে স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন কার্যক্রম সচল রয়েছে।
কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিকদের বকেয়া বেতনসহ মালিক ও কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার কারণে কারখানার বিদ্যুৎ দিল বকেয়া পড়েছে। শ্রম ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবের হস্তক্ষেপে শ্রমিক আন্দোলনের বিষয়টি সমাধান হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বকেয়া থাকার কারণে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে ইচ্ছা থাকলেও কারখানা খোলা সম্ভব হচ্ছে না। কারখানা কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে আজ দুপুরের পর নোটিশ দিয়ে শ্রমিকদের জানিয়ে দিবে কারখানা কবে খোলা হবে।
এদিকে আজ সকাল থেকে অনেক শ্রমিক কারখানায় কাজে আসেন। কিন্তু কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা ফিরে গেছেন। রাজিয়া খাতুন নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘গত তিন দিন আন্দোলনের কারণে কারখানা বন্ধ ছিল। আজ সকালে কাজে এসে দেখি কারখানা বন্ধ রয়েছে।’
আরেক শ্রমিক হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা টেহার লাইগা কাম করি খাই। টেহা পাই নাই, তাই আন্দোলন করছি। টেহা দেওয়ানের কথা দিছে তাই কামে আছি। এহন দেহি ফ্যাক্টরি বন্ধ। দারোয়ান কইলো কবে খুলব পরে জানাইয়া দিবো।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানা বন্ধ আছে। তবে আশপাশের সব কারখানায় শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করেছেন। সকাল থেকে কোনো ঝামেলার খবর পাওয়া যায়নি।