পানিতে ডুবে মৃত্যু
পানিতে ডুবে মৃত্যু

অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূকে বাঁচাতে শাশুড়ির হাওরে ঝাঁপ, পরে দুজনের লাশ উদ্ধার

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মুগরাইন হাওর থেকে দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছেন এলাকাবাসী। সম্পর্কে তাঁরা পুত্রবধূ ও শাশুড়ি। আজ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের জানিয়ারচর গ্রামসংলগ্ন হাওরের মাঝামাঝি এলাকা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

লাশ উদ্ধার হওয়া শাশুড়ির নাম রেজিয়া আক্তার (৪৪)। তিনি উপজেলার জানিয়ারচর গ্রামের ফিরোজ আলীর স্ত্রী। অন্যদিকে মৃত পুত্রবধূর নাম পিপাসা আক্তার (২০)। তিনি ফিরোজ আলীর ছেলে হক মিয়ার স্ত্রী। পিপাসা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে তাঁর স্বামী জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে হাওরে নিজেদের বসতঘরসংলগ্ন ঘাটে গোসল করতে যান শাশুড়ি রেজিয়া আক্তার ও পুত্রবধূ পিপাসা আক্তার। এ সময় ঘাট থেকে পা ফসকে পুত্রবধূ পিপাসা হাওরের স্রোতে ভেসে যান। তখন ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করলে শাশুড়ি তাঁকে বাঁচাতে হাওরের পানিতে ঝাঁপ দেন। এ সময় হাওরের পানির স্রোতে দুজনই তলিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হন। বেলা তিনটার দিকে জাল ফেলে হাওরের মাঝখান থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করেন এলাকাবাসী।

ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নেকচান মিয়া বলেন, পুত্রবধূকে বাঁচাতে গিয়ে শাশুড়ি হাওরের পানিতে তলিয়ে গিয়ে মারা গেছেন। তাঁদের দুজনকে বেলা তিনটার দিকে মৃত অবস্থায় হাওর থেকে উদ্ধার করা হয়।

পিপাসার স্বামী হক মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি পাশের বাড়িতে ছিলাম। আমার স্ত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আমার মা ও বউয়ের মৃত্যু কোনো অবস্থাতেই মেনে নিতে পারছি না।’

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুবায়ের পাশা বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। আমি জরুরি কাজে এলাকার বাইরে আছি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানিয়েছি।’

ধর্মপাশা থানার ওসি মো. শামসুদ্দোহা মুঠোফোনে বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।