ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু
ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু

সন্তানকে কোলে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ, মা ও শিশুর মৃত্যু

গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে এক বছর বয়সী শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন এক মা। এতে ট্রেনের ধাক্কায় মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর রেলস্টেশনের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতেরা হলেন মোসা. নাসরিন আক্তার (২৮) ও তাঁর মেয়ে রউজাতুল জান্নাত রাফসা (১)। নাসরিন পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার টাংগাব গ্রামের রাসেল আহমেদের স্ত্রী। স্বামীর কাজের সুবাদে মাওনা চৌরাস্তার পাশে মুলাইদ গ্রামের এক ভাড়া বাড়িতে সপরিবার থাকতেন তাঁরা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সাতখামাইর রেলস্টেশনের উত্তর দিকে রেললাইনের কাছে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে বসে ছিলেন নাসরিন। এ সময় শিশুটি তাঁর কোলেই ছিল। দু-একজন তাঁর কাছে বসে থাকার কারণ জানতে চেয়েছেন। উত্তরে তিনি কারও জন্য অপেক্ষায় থাকার কথা জানিয়েছেন। এরপর বেলা পৌনে ১১টার দিকে মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি ঘটনাস্থলে গেলে হঠাৎ কোলের শিশুকে নিয়ে রেললাইনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় ওই নারী ও শিশুটি রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলেই নাসরিনের মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে শিশুটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা পৌনে দুইটার রউজাতুলের মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর রেললাইনের পাশে নারীর মরদেহ পড়ে ছিল। আর কিছুটা দূরে শিশুটি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে ছিল। শিশুটির মুখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত লেগে ছিল।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনার কারণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসরিনের স্বামী মো. রাসেল আহমেদ বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে পাচ্ছিলেন না। এরপর মুঠোফোনে কল দিলে নাসরিন জবাব দেন, তিনি সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। কোথায় আছেন জানতে চাইলে সংযোগটি কেটেও দেন স্ত্রী। এর কিছুক্ষণ পর নাসরিনের মৃত্যুর খবর পান তিনি।

রাসেল আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো ঝগড়াঝাঁটি হয়নি। ঘটনাটি কেন ঘটেছে, বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।