ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামের একটি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে ওই জাহাজের চার কর্মচারী দগ্ধ হয়েছেন। আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে সুগন্ধা নদীর তীরের সরকারি তেলের ডিপোর কাছে এ ঘটনা ঘটে। পদ্মা অয়েলের ডিএস হোসেন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তেলবাহী ওই জাহাজের অগ্নিদগ্ধ কর্মচারীরা হলেন পাবনা জেলার মোদাচ্ছেরের ছেলে শাকিল (৩৫), চাঁদপুরের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ফরিদুল আলম(৫৩), পিরোজপুরের সালাম ব্যাপারীর ছেলে ইকবাল হোসেন (২৭) ও বরিশাল বাকেরগঞ্জের শিবপুরের মনিরুল ইসলামের ছেলে মাইনুল ইসলাম (২৯)। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালে আসা দগ্ধ চারজনের চিকিৎসা চলছে। আমাদের চিকিৎসকদের মাধ্যমে সাধ্যমতো তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়। তারপরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এসে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁদের এখানেই চিকিৎসা দেওয়া যাবে, নাকি ঢাকায় তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে।’
পদ্মা অয়েল ও ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঈদের দুই দিন আগে সাগর নন্দিনী-২ নামের একটি তেলবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে এসে ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীর তেলের ডিপো-সংলগ্ন এলাকায় নোঙর করে। জাহাজটিতে ১০ লাখ লিটার জ্বালানি তেল ছিল। এটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিপোতে খালাস করার অপেক্ষায় ছিল। ঈদুল আজহার ছুটিতে ডিপো বন্ধ থাকায় তেল খালাস করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে,পদ্মা অয়েলের ওই জাহাজে মোট ৯ জন কর্মী ছিলেন। আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে ইঞ্জিনের পাশে থাকা রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন জাহাজ থেকে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পেছনের অংশ বিস্ফোরিত হয়। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তাঁদের স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সহায়তা করে। আহত চারজনকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া বাকি পাঁচজনের মধ্যে মো. বেলায়েত হোসেন নামের একজন বাবুর্চিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং অপর চারজন নিখোঁজ রয়েছেন।
পদ্মা অয়েলের ডিএস হোসেন আহমেদ বলেন, অগ্নিদগ্ধদের দ্রুত উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ট্রলারযোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিনরুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
গত বছর নভেম্বর মাসে একই স্থানে সাগর নন্দিনী-৩ নামের আরও একটি তেলের জাহাজে আগুনে দগ্ধ হয়ে সাতজন নিহত হয়েছিলেন।