নিহত কিশোর মো. রবিন হোসেন
নিহত কিশোর মো. রবিন হোসেন

শৌচাগারের পাশে ডাকছিল কুকুর, রিংয়ের ঢাকনা খুলে দেখা যায় লাশ

নিখোঁজের ছয় দিন পর নোয়াখালী সদর উপজেলায় এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজনের তথ্যের ভিত্তিতে আজ সোমবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে কালাদরাপ ইউনিয়নের চুলডগি নামক এলাকার একটি বাড়ির শৌচাগারের ময়লার রিংয়ের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত কিশোরের নাম মো. রবিন হোসেন (১৬)। সে কালাদরাপ ইউনিয়নের রামহরিতালুক এলাকার মো. ইউনুছের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিনের বাবা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। রবিনও তাঁর বাবার অটোরিকশা নিয়ে মাঝেমধ্যে চালাত। ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর অটোরিকশাসহ নিখোঁজ হয় রবিন। তিন দিনেও তাঁর কোনো খোঁজ না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রবিনের মা রুনা আক্তার সুধারাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরই মধ্যে রুনা আক্তার জানতে পারেন, নিখোঁজ হওয়ার দিন তাঁর ছেলের সঙ্গে মো. জুয়েল (২৪) নামের এক তরুণের ঝগড়া ও ধস্তাধস্তি হয়। পরে রুনা আক্তার জুয়েলের বাড়িতে গিয়ে ঘটনা জানতে চাইলে তিনি অসংলগ্ন কথা বলেন। পরে রুনা আক্তার জুয়েলসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পুলিশ জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের পরও ঘটনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার সকালে কালাদরাপ ইউনিয়নে চুলডগি এলাকার জামালের বাড়ির শৌচাগারের ময়লা ফেলার রিংয়ের আশপাশে দীর্ঘ সময় ধরে কুকুর ডাকাডাকি করতে থাকে। তখন বিষয়টি আশপাশের মানুষজনের সন্দেহ হলে তাঁরা রিংয়ের ঢাকনা খুলে দেখেন, ভেতরে একটি লাশ পড়ে আছে। লাশটির মাথা নিচের দিকে, আর পা ওপরের দিকে ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। বাড়ির মালিক জামাল পুলিশের হাতে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া জুয়েলের চাচাতো ভাই। পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি রবিনের বলে শনাক্ত করেন।

ওসি কামরুল ইসলাম জানান, উদ্ধার করা লাশের অনেকটাই পচে ফুলে বিকৃত হয়ে গেছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া জুয়েলসহ পরিকল্পিতভাবে অটোরিকশাসহ কিশোর রবিনকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ ওই স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আরও কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের করা অপহরণ মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে তদন্ত করা হবে। উদ্ধার করা রবিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।