কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আমি ড. ইউনূসকে খুবই ভালোবাসি, পছন্দ করি। তাঁর গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে যখন বিপদে পড়েছিলেন, তখন আমি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। তাঁকে সাহস দিয়েছিলাম। আমি শেখ হাসিনাকেও বলেছিলাম, এ রকম একজন মানুষের লেজ কাটতে গিয়ে আপনি ভালো কাজ করছেন না। তাঁকে আপনি সাহায্য করুন। তাঁকে সব দেশে যেতে দিন। এতে আপনার ভালো হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা তা শোনেননি। তাঁর (ড. ইউনূসের) লেজ কাটতে কাটতে শেখ হাসিনার লেজই কাটা হয়ে গেছে।’
আজ সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক জনসভায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী কথাগুলো বলেন। পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র তালতলা চত্বরে উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এ জনসভা আয়োজন করে। এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পিতা। সংসদ বাতিল হয়েছে, আজ উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভাও বাতিল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বাতিল করবেন? তাঁর নাম পিতা। রাষ্ট্রপিতা। রাষ্ট্রপিতাকে বাতিল করতে গেলে সন্তানের কিন্তু জন্মপরিচয় থাকবে না। একটু ভেবেচিন্তে কাজ করবেন। দেশের অবস্থা মোটেও ভালো না।’
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘দেশটা বিএনপির না। দেশটা জামায়াতেরও না। ১৪ দলেরও না। দেশটা মানুষের। দেশের মানুষকে ভালোবাসুন। তাহলেই দেশে শান্তি বিরাজ করবে।’
বিএনপির উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা জয়ী হয়েছে, তাই বলেই বিএনপি ক্ষমতায় বইসা পড়ছেন, এ রকম ভাববেন না। পাবলিক যদি সমর্থন না করে, তাহলে আওয়ামী লীগের যে দশা হয়েছে, আপনাদেরও তার চেয়ে কম হবে না।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘২৫ বছর ধরে দল করেছি। আওয়ামী লীগ আমাকে মিছিল-মিটিং করতে দেয়নি। কত গাড়ি-বাড়ি ভেঙেছে। ৩২ নম্বরে যাওয়ার সময় তোমরা আমার গাড়ি ভেঙেছ। তোমাদের বোঝাতে পারিনি, আওয়ামী লীগ ও কাদের সিদ্দিকী এক নয়। শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু এক নয়।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আমি বহুবার বলেছি, দেশটা আপনার বাবার-দাদার, এমন ভাববেন না। দেশটা মানুষের। তিনি আমার কথা শোনেননি। আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের বললেন, তোমাদের জন্য আমার দরজা খোলা। ইচ্ছা করলে তোমরা আসতে পারো। তাদের ইচ্ছা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ঘাড়ে ধরে বের করে দিয়েছে।’
উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুস সবুর খানের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক সালেক হিটলু, উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, বাসাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র রাহাত হাসান, পৌর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবু জাহিদ রিপন, উপজেলা কমিটির সহসভাপতি সানোয়ার হোসেন, দুলাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আশিক জাহাঙ্গীর প্রমুখ।