পাবনার ঈশ্বরদীতে কাবাডি খেলা নিয়ে দুই দল শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে
পাবনার ঈশ্বরদীতে কাবাডি খেলা নিয়ে দুই দল শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে

ঈশ্বরদীতে কাবাডি খেলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, শিক্ষকসহ আহত ১০

পাবনার ঈশ্বরদীতে কাবাডি খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয় অবরুদ্ধ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার রিয়াজ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তফা কামাল, এসএসসি পরীক্ষার্থী সালমান হোসেন, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেন ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছে। প্রতিযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আজ উপজেলার রিয়াজ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাবাডি খেলায় অংশ নেয়। খেলা চলাকালে বেলা আড়াইটার দিকে রিয়াজ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের একজন খেলোয়াড়কে অপর পক্ষের খেলোয়াড় লাথি মারলে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। দুই পক্ষ প্রথমে কথা–কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রিয়াজ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আত্মরক্ষায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেখানে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে ভাঙচুর চালায় ও সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানতে চাইলে রিয়াজ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক হিসেবে আমাদের সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা উচিত ছিল; কিন্তু এখানে সেটা হয়নি। আমরা ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

তবে সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খেলার মতো একটি বিষয় নিয়ে এত বড় সংঘর্ষ ও সরকারি কার্যালয়ে হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ধরনের উত্তেজনা গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।