বরিশালে সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিল থেকে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের সব দেনা-পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করার দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক–কর্মচারীদের ব্যানারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০২০ সাল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বরিশালের সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিলের অর্ধশতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীকে বিভিন্ন অজুহাতে ছাঁটাই করা হয়। এই শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই ২০–২৫ বছর ধরে সোনারগাঁও টেক্সটাইলে চাকরি করছিলেন। কিন্তু তাঁদের কারখানা থেকে কোনো ধরনের হিসাব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
বক্তারা বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের গ্র্যাচুইটি, অর্জিত ছুটিসহ বিভিন্ন পাওনা পরিশোধ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এ জন্য শ্রমিকেরা ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য এরই মধ্যে শ্রম আদালতে মামলা করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ শ্রম আদালতে তাঁদের হিসাব জমা দেওয়া এবং সমুদয় পাওনা পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলেও সম্প্রতি আদালতের বিচারক পরিবর্তন হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবেন না বলে জানিয়েছে।
শ্রমিকদের সঙ্গে এই অন্যায্য আচরণ কোনোভানেই মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, গরিব শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা নিয়ে ছলচাতুরী করা হলে এর বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সোনারগাঁও টেক্সটাইল থেকে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক লতিফা বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক তাহমিনা বেগম ও মামুন খান। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ইমাম হোসেন, বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল হাওলাদার, সোনারগাঁও টেক্সটাইল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সাবেক সভাপতি বেল্লাল গাজী প্রমুখ।
সমাবেশে মনীষা চক্রবর্তী বলেন, গরিব শ্রমিকদের শ্রমে-ঘামে মালিকপক্ষের বিত্ত-প্রতিপত্তি ফুলেফেঁপে উঠলেও সামান্য বেতন-ভাতা ও মজুরি পরিশোধ করার সময় যত কার্পণ্য। এটা পুঁজিবাদের গরিব ঠকানো সংস্কৃতিরই অংশ। সামান্য পরিশ্রমের পয়সা পেতেও দরিদ্র শ্রমিকদের আন্দোলন করতে হয়। সোনারগাঁও টেক্সটাইলের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই দাবি আদায় করা হবে।