গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দুটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। তাঁদের বিরুদ্ধে কারখানায় নাশকতা সৃষ্টিসহ শ্রমিকদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে কালিয়াকৈর থানা-পুলিশ আটক ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনি।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকার কোকোলা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড কারখানায় আজ রোববার সকালে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন প্রায় আট হাজার শ্রমিক। বিগত দিনে সরকার সারা দেশে শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবি মেনে নিলেও ওই কারখানার শ্রমিকদের এখনো বেতন বাড়ানো হয়নি। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে কারখানার পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন তাঁরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে পুলিশ মালিকপক্ষের সঙ্গে বসে ধীরে ধীরে শ্রমিকদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা শান্ত হয়ে কাজে যোগ দেন।
অন্যদিকে উপজেলার বক্তারপুর এলাকায় ইকু নিটা (সামাহার) কারখানার শ্রমিকেরা গত বৃহস্পতিবার থেকে বেতন বৃদ্ধিসহ কয়েক দফা দাবিতে কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করছিলেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁরা শুনছিলেন না। এ সময় তাঁরা কারখানার কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর করেন। আজ সকাল থেকে শ্রমিকেরা আবার কারখানায় ঢুকে আন্দোলন করতে থাকেন।
কালিয়াকৈর থানা-পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও কারখানার ব্যবস্থাপক কাজী আরহাফ উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আলোচনা করেন। পুলিশের উপস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আহ্বানের পরও কিছু শ্রমিক নতুন দাবি তুলতে থাকেন এবং কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় উত্তেজিত কিছু শ্রমিক আন্দোলনে যোগ না দেওয়ার অভিযোগে কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করেন। এ সময় শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পৃথক দুটি এলাকায় কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে আটক করা হয়।
কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. যোবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানে কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।