পুলিশের সংবাদ সম্মেলন

মাদকের টাকা জোগাতে চালককে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাই

গাইবান্ধায় অটোরিকশাচালক রুবেল হোসেন (২২) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিরা। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভুট্টাখেত থেকে অটোরিকশাচালক রুবেল হোসেনের (২২) লাশ উদ্ধারের ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মাদক কেনার টাকা জোগাড় করার জন্য অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে রুবেলকে হত্যা করা হয়। এরপর অটোরিকশাটি সাড়ে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে দুর্বৃত্তরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কামাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) আবু লাইস ইলিয়াস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. ইব্রাহিম, সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার ও পরিদর্শক (তদন্ত) রজব আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ১৯ এপ্রিল রাতে সাঘাটার বাদিনারপাড়া গ্রামে অটোরিকশাচালক রুবেলকে হত্যা করা হয়। পরদিন ২০ এপ্রিল ওই গ্রামের একটি ভুট্টাখেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রুবেল সাঘাটা উপজেলার পবনতাইড় গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। ওই দিন রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সাঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।

পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, মামলা দায়েরের পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার জিরাবো এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন সাঘাটা উপজেলার বাদিনারপাড়া গ্রামের ওবায়দুল ইসলাম (২৪) ও রুবেল মিয়া (২২) এবং বরিশালের গুয়াবাড়িয়া গ্রামের জসিম উদ্দিন (৩২)। তাঁদের মধ্যে ওবায়দুলের কাছ থেকে নিহত রুবেলের মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন সাঘাটার বারকোনা গ্রামের সাজু মিয়া (৪০) ও রেজাউল করিম (৫০)। ক্রেতাদের কাছ থেকে অটোরিকশার যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ওবায়দুল, রুবেল ও জসিমের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার দাবি করেন, তাঁরা তিনজন ঢাকার জিরাবো এলাকায় একসঙ্গে বিভিন্ন কাজ করেন। তাঁরা সেখানে একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনজনই মাদকাসক্ত। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তাঁরা ঘটনার দুই দিন আগে একসঙ্গে সাঘাটায় নিজ এলাকায় আসেন। তাঁরা অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ১৯ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে তাঁরা রুবেলের অটোরিকশা ভাড়া নেন। সাঘাটা বাজার থেকে বাদিনারপাড়া গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। পথে নির্জন এলাকায় অটোরিকশাচালক রুবেলকে গলায় চাঁদর পেঁচিয়ে হত্যা করেন এবং লাশ পাশের ভুট্টাখেতে ফেলে চলে যান। পরে তাঁরা অটোরিকশাটি সাজু ও রেজাউলের কাছে সাড়ে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এবং রুবেলের মুঠোফোনটি নিয়ে রাতেই ঢাকায় ফিরে যান।

সাঘাটা থানার ওসি রাজু সরকার বলেন, প্রেস ব্রিফিংয়ের পর গ্রেপ্তার আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হবে।