সিলেটের টিলায় উৎপাদিত লেবুর কদর বেড়েছে স্থানীয় বাজারে

ঝাঁপিতে সাজিয়ে রাখা লেবুর কেনাবেচা চলছে। শনিবার সিলেট নগরের পাইকারি বাজার সোবহানিঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের বাজারে আগে শ্রীমঙ্গল ও ময়মনসিংহ থেকে আসত লেবু। ফলে দাম ছিল বেশি। এখন সিলেটের বিভিন্ন টিলায় চাষ হচ্ছে লেবু, যা স্থানীয় বাজারের চাহিদা মেটাচ্ছে। এসব লেবু তাজা অবস্থায় কেনা যায় বলে স্বাদ ও গন্ধ থাকে অটুট। নিজ এলাকায় উৎপাদন হওয়ায় দামেও কম।

আজ শনিবার সকালে সিলেটের বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট শহরতলি এলাকা, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার থেকে চাহিদার অর্ধেকের বেশি লেবু সরবরাহ করা হচ্ছে স্থানীয় বাজারগুলোতে।

সিলেটে পাইকারি বাজারে প্রতিদিন কয়েক শ বস্তা লেবু বেচাকেনা হচ্ছে। এখানকার বিভিন্ন টিলার লেবুর পাশাপাশি শ্রীমঙ্গল, ময়মনসিংহসহ অন্যান্য এলাকা থেকে আসছে লেবু। তবে সেটির পরিমাণ এখন কমে এসেছে।

জানতে চাইলে সিলেটের এক রেস্তোরাঁর কর্মচারী জুনেদ আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন বাজার থেকে দুই বস্তা করে লেবু কিনতে হয়। এসব লেবু খাবারের সঙ্গে ভোক্তাদের প্লেটে পরিবেশন করেন।

স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়ায় সিলেটে এখন লেবুর দাম কম জানিয়ে জুনেদ আহমদ বলেন, স্থানীয় লেবুগুলো স্বাদ ও মানে ভালো। এ ছাড়া কয়েক দিন রাখা যায়। সে জন্য তাঁরা স্থানীয় লেবু কেনেন।

সিলেটের পাইকারি সবজির বাজার নগরের সোবহানীঘাটের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, করোনাকালে হঠাৎ করে লেবুর কদর বেড়ে যায়। সে সময় এক হালি লেবু ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতো। আবার অনেক বাজারে পাওয়াও যেত না। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ১০০টি লেবু বাজারে আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। আবার আকারভেদে প্রতি বস্তা লেবু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। প্রতি বস্তায় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০টি লেবু থাকে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাইরের এলাকার লেবু প্রতিদিন রাত ৩টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অন্যান্য সবজির সঙ্গে সিলেটে আনা হয়। শুধু লেবু আনতে গেলে লোকসান হয় বলে সঙ্গে অন্যান্য সবজিও আনেন তাঁরা।

আগে সিলেটের বাইরে থেকে ৮০ শতাংশ লেবু আসায় একধরনের সিন্ডিকেট ছিল বলে জানিয়েছেন সোবহানীঘাট সবজি আড়তের ব্যবসায়ী দিলোয়ার হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন সিলেটের টিলায় চাষ হওয়ায় বাইরে থেকে লেবু সরবরাহের হার ৫০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এতে লেবুর দামও কমেছে।

স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে সিলেটের লেবুর চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে দিলোয়ার হোসেন বলেন, বাইরে থেকে লেবু আনতে অনেক সময় লাগে, ফলে তা আর সতেজ থাকে না। অন্যদিকে স্থানীয় লেবু যেমন তাজা থাকে, তেমনি গন্ধ ও স্বাদ দুটিই ভালো।