বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পশুপালন অনুষদের একটি বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পশুপালন অনুষদের প্রধান ফটক থেকে তাঁরা মিছিল শুরু করেন।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও ভেটেরিনারি অনুষদ-সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পশুপালন অনুষদের ডিন কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা একটার দিকে তালা খুলে দিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে মিছিলের সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের গালিগালাজ করেছেন অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির সবাই পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রক্টর। তবে উপাচার্য বলছেন, প্রক্টর ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটু ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। সমাধান করা হচ্ছে। তাঁরা আবার যোগদান করবেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) আবাসিক এলাকা-সংলগ্ন সড়কে অজ্ঞাতনামা এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মাধ্যমে পশুপালন অনুষদের এক ছাত্রী শ্লীলতাহানির শিকার হন। ওই ঘটনার বিচারসহ মোট চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। অন্য দাবিগুলো হলো যান চলাচলের নির্দিষ্ট সড়ক ছাড়া ক্যাম্পাসের যত্রতত্র অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা, রিকশার নির্ধারিত কোড ও চালকদের পোশাকের ব্যবস্থা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে খামারের সড়কগুলোতে দ্রুত নিরাপত্তা জোরদার করা।
বিক্ষোভ মিছিলের সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের গালিগালাজ করে স্লোগান দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করে গালিগালাজ করেছেন। যেখানে শিক্ষকদের সম্মান নেই, সেখানে আমাদের কাজ করা সম্ভব না। আমরা প্রক্টরিয়াল বডির (প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টর) সদস্যরা স্ব স্ব স্বাক্ষর করে একযোগে পদত্যাগপত্র প্রক্টরিয়াল কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের স্লোগান ছিল—‘আমার বোন লাঞ্ছিত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বোবা প্রশাসনের টনক নড়বে কবে?’, ‘সিসিটিভি আছে, ফুটেজ নাই, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগত কেন?’ এমন। স্লোগানের মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের আওয়াজ তুলেছেন। শিক্ষকদের কোনো ধরনের গালিগালাজ বা অসম্মান তাঁরা করেননি।
জানতে চাইলে উপাচার্য এমদাদুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথগুলোতে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে সংযোগ জোরদার করতে সাধারণ নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। খামারের সড়কগুলোতে আজ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। শ্লীলতাহানির ঘটনার উপযুক্ত বিচারের জন্য পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা হয়েছে।
প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, প্রক্টর ও ছাত্রদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টির সমাধান করা হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। প্রক্টররা আবার যোগদান করবেন।