প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা গুচ্ছগ্রামে
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা গুচ্ছগ্রামে

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগ

ত্রাণ পেয়ে খুশি কোম্পানীগঞ্জের ১৫০ পরিবার

‘আমার নাই পুলা, নাই জামাই, মাইনষের ঘরো কাম খইরা খাইতাম। অখন আর শরীরে চলে না। বন্যাত গলাসমান পানি উঠছ ঘরো। জান আর বাঁচে নান দেইখা আরেক বাড়িত গিয়া উঠছি। ৯ দিন পর ঘর থাকি পানি গেছে। আমার মেয়েডাও প্রতিবন্ধী। কেউ কুনতা দিলে মুখে খাওন জুটে। এখন ত্রাণ পাইছি, খুব খুশি লাগতাছে। পেট ভইরা খাইতাম পারমু।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ত্রাণ পেয়ে এ কথা বলছিলেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শিমুলতলা গুচ্ছগ্রামের স্বামীহারা আইবুন নেসা (৫৫)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর মতো গ্রামের ১৫০টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। শহর থেকে প্রথমে লেগুনা ও পরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের শিমুলতলা গুচ্ছগ্রামে গিয়ে ত্রাণ দেওয়া হয়। বন্যার্ত মানুষেরা ত্রাণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ছিল ১০ কেজি চাল, এক লিটার সয়াবিন তেল, এক কেজি ডাল ও এক কেজি লবণ।

ত্রাণসামগ্রী বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রামের সমাজকর্মী আবদুর রউফ, প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি অন্তর শ্যাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল রায়, দপ্তর সম্পাদক সমরজিৎ হালদার, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক পিয়াস সরকার, সদস্য জয় তালুকদার প্রমুখ।

ত্রাণ পেয়ে ৮০ বছর বয়সী নূর মিয়া বলেন, ‘২৪ বছর ধইরাই গুচ্ছগ্রামও আছি। প্রতিবছরই চার থেকে পাঁচবার পানি ওঠে। ইবার ঘরে বুকসামান পর্যন্ত পানি উঠছে, খুব কষ্ট কইরা দিন কাটে। ঈদ আনন্দের দিন, কিন্তু ইদিনই বেশি কষ্ট পাইছি। ঈদের দিন নৌকা দিয়া কেউ আমরারে উদ্ধার করছে না। কানছি পর্যন্ত, কেউ ছিল না। সাঁতারাইয়া উঁচু জায়গাত উঠছি। এই বন্যাত কেউ ত্রাণ দিছে না আমরারে। অখন ত্রাণ পাইছি, মনে একটু শান্তি লাগে।’

গ্রামের সমাজকর্মী আবদুর রউফ জানান, এবারের বন্যায় অনেক মানুষ ভুক্তভোগী। গুচ্ছগ্রামে যেন দুর্যোগ থামে না। মানুষের খাবারদাবারের সমস্যা হয়েছে অনেক। আশ্রয়কেন্দ্র নেই। বন্যা হলেই গ্রামের মানুষের জিনিসপত্রসহ সবকিছু ভেসে যায়। বেশ কয়েকবার প্রথম আলো ট্রাস্ট এখানে ত্রাণ দিয়েছে। সত্য প্রকাশের পাশাপাশি এ পত্রিকা মানুষের দুর্ভোগে পাশে রয়েছে। প্রথম আলো ট্রাস্ট পরবর্তী সময়ে সব দুর্যোগেই সহযোগিতার মাধ্যমে পাশে থাকবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন আবদুর রউফ।

এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসি। বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই অনুদানের টাকায় বন্যার্ত মানুষের কাছে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

বন্যার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।