লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মো. কামাল উদ্দিন (৪৬) নামের এক শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার মধ্য মাছিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ কে এম ফারুক অফিসকক্ষে পিটিয়ে আহত করেন ওই শিক্ষককে। তবে অভিযুক্ত ফারুকের ভাষ্য, ঘটনার আগে শিক্ষক কামাল উদ্দিনই তাঁকে মারার জন্য তেড়ে আসেন। এ সময় বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকেরা আহত শিক্ষককে উদ্ধার করে রামগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আহত কামাল উদ্দিন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযুক্ত এ কে এম ফারুক উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি। শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁরা ঘটনার বিচার দাবি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা শিক্ষক সমিতি থেকে কর্মসূচির ঘোষণা করব।মো. জাহাঙ্গীর আলম শেখ, সভাপতি, রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ কে এম ফারুক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কক্ষে যান। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক কামাল উদ্দিন কক্ষে ছিলেন। পাশের মাছিমপুর উচ্চবিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। ফারুক ওই উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যপদে দায়িত্বে রয়েছেন। এই নিয়ে ফারুক ও শিক্ষক কামাল উদ্দিন তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ফারুক উত্তেজিত হয়ে স্টিলের স্কেল নিয়ে শিক্ষকের মাথায় আঘাত করেন। এতে কামাল উদ্দিনের মাথা ফেটে যায়।
কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সভাপতি ফারুক হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে আমার মাথায় আঘাত করেন। তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই দৃশ্য দেখে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অফিস কক্ষে জড়ো হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
তবে এ কে এম ফারুক বলেন, ‘শিক্ষক কামাল উদ্দিন আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসেন। এ সময় আমি নিজেকে বাঁচাতে তাঁর টেবিলের ওপর থাকা স্কেল নিলে তিনি মাথায় সামান্য আঘাত পান।’
রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম শেখ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা শিক্ষক সমিতি থেকে কর্মসূচির ঘোষণা করব।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা ফেরদৌসী বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আহত শিক্ষককে দেখতে আমরা হাসপাতালে গিয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’