গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় গত ৫ আগস্টের পর দখল হওয়া জমি উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা বন বিভাগ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উপজেলার পূর্ব চন্দ্রা বোর্ড মিল ও পাশা গেট এলাকায় এই অভিযানে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে ছয় একর বনের জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব চন্দ্রা বোর্ড মিল ও পাশা গেট এলাকায় স্থানীয় ভূমিদস্যুরা বনের গাছ কেটে বন বিভাগের জমিতে কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলেন। বন বিভাগের কর্মীরা একাধিকবার তাঁদের বাধা দিলেও অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা থেকে বিরত থাকেননি তাঁরা। বন বিভাগের লোকজন অবৈধ এসব স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিতে গিয়ে একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় বন বিভাগের কর্মীরা কালিয়াকৈর থানায় একাধিক মামলাও করেন।
এমন অবস্থায় আজ বেলা সাড়ে ১১টায় কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আহাম্মেদের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান শুরু করে বন বিভাগ। ঢাকা বন বিভাগের ৪টি রেঞ্জের ২৫টি বিটের ৮০ জন বন কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বন বিভাগের কর্মীরা কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা এক্সকাভেটর (মাটিকাটার যন্ত্র) ব্যবহার করে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন।
ঢাকা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষণ রেজাউল আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর স্থানীয় ভূমিদস্যুরা বনের জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলেন। বন বিভাগ প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষা করতে, তবে দখলদারদের প্রভাব অনেক সময় এসব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়। এই অভিযানের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে প্রশাসনের সহায়তায় দখলকারীদের বিরুদ্ধে সফলতা পাওয়া সম্ভব। ভবিষ্যতে যাতে বনাঞ্চলগুলো আবারও অবৈধ দখলের শিকার না হয়, সে জন্য নিয়মিত অভিযান ও নজরদারি জোরদার করা হবে।
কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, উপজেলার বিভিন্ন বন বিটের আওতাধীন এলাকায় ভূমিদস্যুরা বন উজাড় করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে আসছিলেন। বন বিভাগের সুপারিশে যৌথ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বনের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এতে ৬ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৬০ কোটি টাকা। পর্যায়ক্রমে বনের জমিতে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।