গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্যের পদত্যাগ

এ কিউ এম মাহবুব ও সৈয়দ সামসুল আলম (ডানে)
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব ও সহ-উপাচার্য সৈয়দ সামসুল আলম পদত্যাগ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর তাঁরা পদত্যাগপত্র পাঠান।

এর আগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক-কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে নিজে পদত্যাগ করেন উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব। তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্রে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার কথা উল্লেখ করেন।

উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগের পর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব বলেন, ‘আমরা লেজুড়ভিত্তিক কোনো রাজনৈতিক দলের প্রশাসন চাই না। আমরা নিরপেক্ষ প্রশাসন চাই। যারা সব সময় আমাদের সহযোগিতা করবে। শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে। পদ হারানোর ভয়ে নিজের দায়িত্ব ভুলে যাবে না। আমরা নতুন করে একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনের দাবি জানাই।’

গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সৈয়দ সামসুল আলম, নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের শিক্ষক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা, সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম হীরা, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক এমদাদুল হক সোহাগ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষক সোলাইমান হোসেন মিন্টু ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ তারেকের বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।

আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মো. ইমন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগে বাধ্য করে মেরুদণ্ডহীন প্রশাসন। সরকার পতনের পর ১৭ আগস্ট শিক্ষার্থীরা ১৫ দফা দাবি জানান। আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত দাবি বাস্তবায়নের শেষ সময় ছিল। ওই সময়ের মধ্যে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ বেলা তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অব্যাহতির দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অব্যাহতি দিয়ে নিজে পদত্যাগ করেন।

৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের পদত্যাগের দাবি তুলছেন শিক্ষার্থীরা। ইতিমধ্যে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনাসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেছেন।