বগুড়ায় আজ বুধবার শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। দুপুর ১২টায় শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায়
বগুড়ায় আজ বুধবার শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। দুপুর ১২টায় শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায়

বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের বাধা, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে এবং ৯ দফা দাবি আদায়ে আজ বুধবার বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে।  ফলে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদালত চত্বর পর্যন্ত যেতে পারেননি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। প্রায় দুই ঘণ্টা শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ সড়ক, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, রোমেনা আফাজ সড়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘিরে আজ সকাল থেকেই বগুড়া আদালত ভবনের সব ফটকে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন। এ সময় জেলা জজ আদালতের প্রধান ফটক বন্ধ করে পকেট ফটক খোলা রাখা হয়। ভেতরে কোনো কোনো গাড়ি যেতে দেওয়া হয়নি। বিচারপ্রার্থীরা ও আইনজীবীরাও হেঁটে গেছেন আদালত চত্বরে।

বেলা ১১টার দিকে জলেশ্বরীতলা আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে জেলা জজ আদালত অভিমুখে রওনা দেয়। পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা রোমেনা আফাজ সড়কের মোড়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ঢাল তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়। তবে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য

আদালত চত্বরে যেতে না পেরে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ সড়কেই বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা ‘জেগেছে যে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘তুমি কে, আমি কে, সমন্বয়ক, সমন্বয়ক’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘শিক্ষাথীদের বুকে গুলি কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দিনে নাটক, রাতে আটক’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এ সময় জলেশ্বরীতলা এলাকায় কয়েকটি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক এবং কালীবাড়ি মোড় হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক হয়ে জেলখানা লাবাম্বা মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

পরে জেলখানা লাবাম্বা সড়কে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিওপি) শিক্ষার্থী আল আরাফাত, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অভি প্রমুখ।

এর আগে সকাল থেকেই শহরে তৎপর ছিল পুলিশ। একসঙ্গে একাধিক শিক্ষার্থী দেখামাত্র তল্লাশি করেন পুলিশ সদস্যরা। এর মধ্যেই শহরের জলেশ্বরীতলা আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ থেকে মিছিল বের করা হয়।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।