বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় সিজান বাবু (১৪) নামের এক বিদ্যালয়ছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের বিবিরপাড়া গ্রামের মহিষাগারা বিল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ধুনট ও সারিয়াকান্দি থানার পুলিশ।
সিজান বাবু ধুনট উপজেলার হটিয়ারপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ও জোড়শিমুল উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একই গ্রামের ও একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ‘কিশোর প্রেম’–সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা সিজান বাবুর বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ‘বড় ভাই’। তাকে আটকের জন্য অভিযান চলছে।
আটক কিশোরের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, আটক কিশোর, হত্যাকাণ্ডের শিকার সিজান বাবু ও পলাতক কিশোর তিনজনই জোড়শিমুল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, পলাতক কিশোর একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে পছন্দ করত। কয়েক দিন আগে মেয়েটির বাল্যবিবাহ হয়। পলাতক কিশোর সম্পর্কে সিজান বাবু বদনাম ছড়ানোর কারণে মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে হয়েছে—এমন সন্দেহ থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে সিজানকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করে ওই কিশোর। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গতকাল রাত আটটার দিকে গাঁজা সেবনের টোপ দিয়ে আটক কিশোরের মাধ্যমে সিজান বাবুকে বাড়ি থেকে বিলের পাড়ে ডেকে নেয় পলাতক কিশোর। কথা বলার একপর্যায়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই অতর্কিত গলায় চাকু বসিয়ে দেয়। পরে আটক কিশোর দৌড়ে জোড়শিমুল বাজারে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনা খুলে বলে।
সিজান বাবুর মা শিল্পী খাতুন বলেন, আটক ও পলাতক দুই কিশোর সিজানকে রাত আটটার দিকে গল্প করার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। দুজন মিলে একা পেয়ে তাকে হত্যা করেছে। তিনি আহাজারি করে বলেন, ‘ওরা হামার এই সব্বনাশ ক্যান করল? হামার সোনার ময়নারে হামি কুনটি পামু? হামার একমাত্র বুকের ধনডাক ওরা ক্যান এভাবে মারল?’
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পলাতক কিশোরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।