গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় আরও চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে শিল্প পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে এই চারজনের কারও নাম নেই। প্রথমে তাঁদের সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই মামলায় সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গতকাল রাতে গ্রেপ্তার চারজন হলেন রাইসুল ইসলাম ওরফে রাতুল (১৯), মো. জুলহাস আলী (২৩), সোহেল হাসান ওরফে সোহাগ (২৩) এবং শাহীনুর ইসলাম ওরফে শাহীন (২১)। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা সবাই টঙ্গীর সাতাইশ ও সাতাইশ চৌরাস্তা এলাকায় থাকেন। তাঁরা বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মামলা তদারক কমিটির সভাপতি ইমরান আহম্মেদ জানান, গ্রেপ্তার রাতুল, জুলহাস, সোহাগ ও শাহীন। এঁদের কেউ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে হত্যার ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। সেই সূত্র ধরে বুধবার রাতে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আজ বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে চারজনকেই কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
ইমরান আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাটি বিভিন্ন কারণে অতিগুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। তাই আমরা সবদিক বিবেচনা বা যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এগোচ্ছি। নতুন গ্রেপ্তার চারজন এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
শহিদুল ইসলাম বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। গত ২৫ জুন টঙ্গীর সাতাইশ বাগানবাড়ি এলাকার প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড কারখানায় শ্রমিকদের পাওনা টাকা আদায়ে কাজ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন। এ ঘটনায় ২৬ জুন টঙ্গী পশ্চিম থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কল্পনা আক্তার।
এই মামলায় এর আগে মো. মাজাহারুল, মো. হানিফ ওরফে ম্যানেজার হানিফ ও মো. রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা সবাই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এর মধ্যে হানিফ বর্তমানে কারাগারে। মাজাহারুল ও রাসেল পুলিশের রিমান্ডে রয়েছেন। প্রাথমিক অবস্থায় মামলাটির তদন্ত করছিল টঙ্গী পশ্চিম থানা–পুলিশ। পরবর্তী সময়ে ৬ জুলাই মামলাটির তদন্তভার পেয়ে নতুন করে মাঠে নামে গাজীপুর জেলা শিল্প পুলিশ।