মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাসমান একটি ক্রেনের মাধ্যমে ট্রলারটি নদীর তলদেশ থেকে তোলা হয়। তবে ট্রলারে নিখোঁজ কারও মরদেহ পাননি উদ্ধারকারীরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক ওবায়দুল করিম খান বলেন, বৃষ্টি ও স্রোতের কারণে ট্রলারটি উদ্ধার করতে বেগ পেতে হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা ট্রলারটির উদ্ধারকাজ শুরু করে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডুবে যাওয়া স্থান থেকে ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে।
ওবায়দুল করিম খান বলেন, ট্রলারটি থেকে কয়েকটি মুঠোফোন পাওয়া গেছে। তবে কারও লাশ পাওয়া যায়নি। স্বজনদের দাবি, ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনো পাঁচজন নিখোঁজ। তাঁদের মধ্যে দুটি শিশু ও তিনজন নারী রয়েছেন।
আজ সকাল থেকে রসকাঠি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের দুই পাড়ে উৎসুক জনতার ভিড়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএর লোকজন অভিযান চালাচ্ছেন। তবে বৃষ্টিতে বিঘ্নিত হচ্ছিল উদ্ধার অভিযান। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নিখোঁজ পাঁচজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে লৌহজং উপজেলার রসকাঠি এলাকার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালে বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ওই ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় আটজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মোকছেদা বেগম (৪০), হ্যাপি আক্তার (২৮), পপি আক্তার (৩০), পপির দুই ছেলে সাকিবুল (১০), সজিবুল (৪)। হুমায়রা (৫ মাস), ফারিয়ান (৮) ও রাকিবুল (১২)। তাঁদের সবার বাড়ি সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েক বাসিন্দা জানান, দুপুরের পর লতাব্দি ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ ৪৬ ব্যক্তি ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দির দিকে যাচ্ছিল। রাত আটটার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর গতকাল রাত থেকেই উদ্ধার অভিযান শুরু করেন ডুবরিরা।
ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আরাকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।