কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটিও ফুলপরীকে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচজন নির্যাতন করেছেন, এর সত্যতা পেয়েছে। এই পাঁচজনকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রলীগ।
সানজিদা চৌধুরী এখনো ছাত্রলীগের কমিটিতে বহাল। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ওই দিনই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল।
নির্যাতনের ঘটনার ১৬ দিন এবং ছাত্রলীগের গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৩ দিন পেরিয়ে গেছে। তারপরও সানজিদার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়াকে ‘দুরভিসন্ধি’ বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত যারা আছে, সবার সঙ্গে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাতে মোটামুটি তাঁর (ফুলপরী) সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, এর কিছুটা সত্যতা আমরা পেয়েছি। এ কারণে আমরা ওইভাবে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।’
এখনো দোষী সাব্যস্ত নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের। তবে যে সিদ্ধান্তই আসুক, সেটাকে স্বাগত জানাব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।