আর কয়েক দিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। তাই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে কর্মস্থল ছেড়ে বাড়িতে ছুটতে শুরু করেছে মানুষ। পদ্মা সেতুর কারণে ফেরিতে ভিড় কম। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী অনেক মানুষ লঞ্চে করে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে আসছে।
সকালে দীর্ঘক্ষণ দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায়, পাটুরিয়া ঘাট ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের ভিড়। সাধারণের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এ সময় পন্টুনে দাঁড়িয়ে থাকা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যাত্রীদের নামানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন। সার্বিক বিষয় তদারক করছেন বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।
সকালে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে যাচ্ছিলেন মঞ্জুরুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। এ সময় তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর দুই বছর ধরে আমরা অনেকটা স্বস্তিতেই বাড়িতে ফিরতে পারছি। আজ (গতকাল) সকালে রওনা দিয়েছি। সড়কপথে গাড়ি কিছুটা কম ছিল। এ ছাড়া তেমন কোনো সমস্যায় পড়িনি। এখন ঘাট থেকে সহজে বাড়িতে ফিরতে পারলে আমাদের জন্য ভালো।’
সাভারের একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগে চাকরি করেন মো. সাদ্দাম হোসেন। তিনিও লঞ্চ থেকে নেমেছেন। বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। ঈদ করতে দাদাবাড়ি ফরিদপুরের মধুখালীতে যাচ্ছি।’ তবে আগেভাগে রওনা দিয়েও লঞ্চে ভিড় পেয়েছেন তিনি।
ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুরুজ্জামান যাচ্ছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গ্রামের বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা অনেকটা স্বস্তির সঙ্গে এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমার মনে হয়, পদ্মা সেতুর প্রভাব এই ঘাটেও পড়েছে। যে কারণে দুই বছর আগে যেমন ভিড় থাকত, এখন তেমনটা নেই।’
বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন বলেন, ঈদে যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়িতে ফিরতে পারেন, এ জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ২০টি লঞ্চ চালু রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। ঈদের ছুটিতে এখনই মানুষজন শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে।
এদিকে ফেরিঘাটে ঢাকামুখী যানবাহনের তেমন কোনো চাপ দেখা যায়নি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী পরিবহনের চাপ পাটুরিয়া ঘাটে থাকায় ফেরিগুলো দৌলতদিয়া ঘাটে বেশিক্ষণ অপেক্ষা না করে দ্রুতই ছেড়ে যাচ্ছে। দুই-চারটি যানবাহন যা আসছে, সেগুলো নিয়েই ফেরি চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া কোরবানির পশুবাহী গাড়ির সংখ্যাও তুলনামূলক কমে গেছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, গত বুধবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় আড়াই হাজার যানবাহন দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া ঘাট পাড়ি দিয়েছে। এর মধ্যে শুধু পশুবাহী গাড়িই ছিল পাঁচ শতাধিক। তবে গতকাল পশুবাহী গাড়ির চাপ কমে গেছে। বর্তমানে এই নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।