ঝোপজঙ্গলে ভরা রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার খারুভাজ জলমহাল এখন বিনোদন পার্ক। বিনোদনপ্রেমী মানুষের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠছে এলাকাটি। খোলামেলা পরিবেশে জলমহালের পাশে ঘুরছেন-ফিরছেন নানা বয়সী মানুষ।
একসময় এই জলমহাল ছিল ঝোপজঙ্গলের ভরা। মানুষের আনাগোনা ছিল না। পোকামাকড়ের ভয়ে এই জলমহালের পাশে কেউ যেতে চাইতেন না। সেই দৃশ্য এখন আর নেই। জলমহাল ঘিরে হয়েছে বিনোদন পার্ক। দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে সেটি। জলমহালের বুকে চলছে নৌকা। চারদিকে গাছগাছালি। বিনোদন পার্কের নাম দেওয়া হয়েছে খারুভাজ বিনোদন পার্ক। আছে খড়ের ছাউনি, বসার বেঞ্চও। সব মিলিয়ে ছায়ায় ঘেরা নিরিবিলি পরিবেশ।
গতকাল রোববার বিকেলে ঘুরতে-ফিরতে কথা হলো এখানে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীর সঙ্গে। রংপুর সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী রিফা মণি বলেন, ‘বাড়ির পাশে এই বিনোদন পার্কে প্রতিদিনই ঘুরতে আসি। আগে এখানে ভয়ে আসা হতো না। এখন জলমহালটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বিনোদন পার্ক করা হয়েছে। এর ফলে এখানকার আশপাশের পরিবেশও সুন্দর হয়ে উঠেছে।’
সরেজমিন দেখা যায়, পার্কের সামনে খড়-বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি ফটক। নানা রং ও শোভাবর্ধনকারী গাছে সজ্জিত করা দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা আছে। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় জলমহালে নৌভ্রমণের ব্যবস্থা আছে।
রংপুর শহর থেকে এসেছেন কারমাইকেল কলেজের স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দুই বন্ধু ঘুরতে এসেছি। শুনেছি, সবে এটি পার্ক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
পার্কের সৌন্দর্যবর্ধনে এখনো কাজ চলছে। মাত্র তিন মাস হলো পার্ক উদ্বোধনের। বিনোদন পাওয়ার পুরোপুরি উপযোগী না হতেই বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে লোকজন বেড়াতে আসছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, একসময় এখানে শুধু মাছ চাষই করতেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। তদারকি না থাকায় জলমহালের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
গঙ্গাচড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, গ্রামীণ পরিবেশ, চারদিকে আছে নানা প্রজাতির গাছগাছালি। উপজেলার সবচেয়ে বড় জলমহাল এটি। বিনোদনের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হবে। আশা করা যাচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যে শীতের অতিথি পাখিও এখানে আসতে শুরু করবে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, ট্যুরিজম বোর্ড অর্থ বরাদ্দ দিলে এটিকে আরও সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব।