ভোটকেন্দ্রে স্থাপন করা সিসিটিভি। আজ দুপুরে গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকার হাজী তাজউদ্দিন মৃধা হাইস্কুলে
ভোটকেন্দ্রে স্থাপন করা সিসিটিভি। আজ দুপুরে গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকার  হাজী তাজউদ্দিন মৃধা হাইস্কুলে

৪৮০ কেন্দ্রের সবগুলোতেই থাকছে সিসি ক্যামেরা, ঢাকায় বসে দেখবে ইসি

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এরই মধ্যে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৪৮০টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএমে) মাধ্যমে হবে ভোট গ্রহণ। সবগুলো কেন্দ্রেই লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাঁদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।

গাজীপুর সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর সিটিতে ৪৮০টি কেন্দ্রে মোট ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এর ফলে সবগুলো কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বড় পর্দায় ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

ফরিদুল ইসলাম বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরায় কোনো অনিয়ম দেখতে পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া যেহেতু সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে, তাই প্রতিটি কেন্দ্রে অতিরিক্ত ভোটিং মেশিন রাখা হচ্ছে। মেশিন মেরামতের জন্য ট্রাবলশুটার রাখা হয়েছে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের জন্য ৪৮০টি কেন্দ্রে মোট ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর শহরের শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ভোটকক্ষে লাগানো হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা দিয়ে গোপন কক্ষ ছাড়া পুরো কক্ষে কী হচ্ছে, তা দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া ভোটকক্ষের বাইরে ভোটারদের সারি যেখানে থাকবে, সেখানেও তিনটি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ক্যামেরাগুলো দিয়ে ভোটের পুরো চিত্র দেখা যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকায় ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে কেউ তাঁদের প্রভাবিত করতে পারবেন না। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা তাৎক্ষণিক ঢাকা ও গাজীপুরের নির্বাচন কর্মকর্তারা দেখতে পারবেন এবং ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এবার গাজীপুরের ভোট সুষ্ঠু হবে বলে আশা করেন তিনি।

ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন

সাধারণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৬ জন সদস্য দায়িত্বপালন করবেন। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বপালন করবেন ১৭ জন।

প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে মোট ৫৭টি মোবাইল ফোর্স, ৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১টি করে মোট ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং প্রতি থানায় ১টি করে মোট ৮টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া ২টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১টি করে ৩০টি র‍্যাবের টিম এবং ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১ প্লাটুন করে ১৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সব কেন্দ্রই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৩৫১টি কেন্দ্র। আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, সে যে দলের বা যে–ই হোক না কেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে।’