বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার খুলেছে বিদ্যালয়। শঙ্কা কাটিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার খুলেছে বিদ্যালয়। শঙ্কা  কাটিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

মিয়ানমারে সংঘাত

সীমান্তে ৩ দিন ধরে গোলাগুলির শব্দ নেই, স্কুলে যাচ্ছে শিশুরা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তিন দিন ধরে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ বন্ধ আছে। এ কারণে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ২৭ গ্রামের মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে আছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত টানা তিন দিন ওপারের গোলাগুলির শব্দ এপারের লোকজন শুনতে পাননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় কিছু মানুষ ধান চাষ ও সবজি চাষে নেমেছেন। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে গিয়ে পাঠ নিচ্ছে। ২৩ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর গতকাল বুধবার থেকে ঘুমধুমের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই হাজার।

মিয়ানমারের সীমান্ত লাগোয়া ঘুমধুমের ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহেদ হোসাইন বলেন, তিন দিন ধরে গোলাগুলির শব্দ কানে আসছে না। সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় গতকাল থেকে পাঠদান শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, তারপরও আতঙ্ক থেকে যাওয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কারণ, কখন ওপার থেকে গুলি এসে পড়ে, তার ঠিকঠিকানা নেই।

তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল পাহাড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইশফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম দেখা গেছে।

৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে ঘুমধুমের জলপাইতলীতে দুজন নিহত হন। গোলাগুলিতে আহত হন নয়জন। এরপর ঘুমধুম সীমান্তের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, টানা এক মাস ধরে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। কিছুদিন গোলাগুলির পর গত সোমবার সকাল থেকে হঠাৎ লড়াই থেমে গেছে। আজ সকাল সাতটা পর্যন্ত তিন দিন ওপারের গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা যাচ্ছে না।

উখিয়ার পালংখালী ইউপির চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাখাইনে গোলাগুলি বন্ধ থাকায় এপারের মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। তবে গুলি এসে পড়ার ভয়ে হাজারো মানুষ সীমান্তঘেঁষা চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষের জমিতে যেতে পারছেন না।
টেকনাফের হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, আগে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ওপারে ছোড়া মর্টার শেলের বিকট শব্দে এপারের ভূখণ্ড কেঁপে উঠত। কিন্তু তিন দিন ধরে গোলাগুলির শব্দ কানে আসছে না। এখন দুই পক্ষের যুদ্ধ চলছে হ্নীলা থেকে শত কিলোমিটার দূরে বুচিডং ও রাচিডং এলাকায়। এ কারণে গুলির শব্দ কানে আসছে না।

রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর নজরদারিতে আছে বিজিবি।