বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জের ধরে শহিদুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত একটার দিকে পাথরঘাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাথরঘাটার দক্ষিণ চরদুয়ানী গ্রামের একচল্লিশ ঘর এলাকায় শহিদুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত শহিদুল ইসলামের বাড়ি পাথরঘাটার দক্ষিণ চরদুয়ানী গ্রামে। তিনি পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবিরের (কাপ পিরিচ) সমর্থক ছিলেন।
নিহত শহিদুলের মেয়ে তানিয়া বেগমের ভাষ্য, ‘আমার বাবা পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবিরের (কাপ পিরিচ) পক্ষে কাজ করেছেন। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর বিজয়ী চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইনের (দোয়াত-কলম) সমর্থকেরা বাবাকে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকেন। নির্বাচনের পরে বাবা বাড়ি থেকে কিছু দিন দূরে ছিলেন। কয়েক দিন আগে বাড়ি ফিরলেও তেমন বের হতেন না। গতকাল শনিবার বিকেলে বাজার থেকে আসার পথে চেয়ারম্যানের সমর্থক নাসির বিশ্বাস, রুবেল বিশ্বাস, আব্বাস মল্লিকসহ অন্তত ১০ থেকে ১২ জন বাবাকে পথরোধ করে কুপিয়ে ফেলে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাবাকে পাথরঘাটা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি মারা যান।’
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রাশিদা তানজুম বলেন, শহিদুল ইসলামের শরীরে ধারালো অস্ত্রের প্রায় ২০টি আঘাত আছে। এ ছাড়া তাঁর পায়ের রগ কাটা ছিল। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁর পুরো শরীরে কাদা মাখা ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত শহিদুল ইসলামের ছোট ভাই নাসির হাওলাদারের অভিযোগ, বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইনের নির্দেশে তাঁর লোকজন কয়েক দিন আগে ভাতিজি (নিহত শহিদুলের মেয়ে) তানিয়া বেগমের ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে পাথরঘাটা থানায় মামলা করলে তাঁর (নাসির) ওপর হামলা করে বাম হাত ভেঙে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। হামলার ঘটনায় পাথরঘাটা থানায় মামলা করলে তাঁর বড় ভাই শহিদুলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন হয়েছে গত মাসের ৯ জুন। এখন তো নির্বাচনী জের থাকার কথা না। ওই গ্রাম থেকে প্রায় ৮০০ মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন, আর যাঁরা তাঁকে কুপিয়েছে তাঁরা আমার সমর্থক কি না, তা আমার জানা নেই। তবে তাঁকে (শহিদুল) যাঁরা কুপিয়েছে, তার সুষ্ঠু বিচার আমিও চাই।’
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।