জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ওরফে বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন তালুকদার স্বাক্ষরিত একটি পত্রে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
মাহমুদুল আলম সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি ওই ইউপির চেয়ারম্যান। তাঁর নির্দেশেই সাংবাদিক গোলাম রব্বানিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজন ও সহকর্মীদের। পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন মাহমুদুল আলম।
গত বুধবার রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাটহাটি মোড়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি। এ সময় তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। উপজেলা শহরের গরুহাটি কাছারিপাড়ায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন গোলাম রব্বানি।
এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কারে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিক হত্যার ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রশাসন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আপনার (মাহমুদুল আলম) সংশ্লিষ্টতা জোরালোভাবে উল্লেখিত হওয়ায় দলীয় ভাবমূর্তি প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। ইতিপূর্বেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আপনার অসাংগঠনিক কার্যক্রম এবং অসদাচরণ প্রকাশ পাওয়ায় আপনাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো এবং সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।’ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা চিঠি পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাহমুদুল আলমকে।
বহিষ্কারের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন তালুকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। তবে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু বকশীগঞ্জের মানুষ নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষ ওই চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করছেন। ইতিমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ওই চেয়ারম্যানকে তাঁর দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে এবং সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হবে। সাত দিনের মধ্যে জবাব না দিলে, তাঁকে স্থানীয়ভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’