উখিয়ায় প্রিজন ভ্যানে হামলা করে আসামি ছিনতাই

কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং আশ্রয়শিবির থেকে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে এক আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কামাল হোসেনকে আজ শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া তিনজন রোহিঙ্গাকে টেকনাফের মোচনী আশ্রয়শিবিরে এপিবিএনের কাছে হস্তান্তরের জন্য নেওয়া হচ্ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে প্রিজন ভ্যানটি কুতুপালং আশ্রয়শিবির এলাকায় পৌঁছালে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী মুন্না গ্রুপের সদস্যরা প্রিজন ভ্যানে হামলা চালায় এবং কামাল হোসেনকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলায় ভ্যানে থাকা কারারক্ষী শহিদুল ইসলাম ও চালক আহত হন।

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মাদকের টাকা লেনদেন এবং আশ্রয়শিবিরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কামাল হোসেনের সঙ্গে মুন্না বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। কামাল হোসেন কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি আগেভাগে জেনে যায় মুন্না বাহিনী। বিকেল পাঁচটার দিকে কামালকে নিয়ে প্রিজন ভ্যানটি কুতুপালং আশ্রয়শিবির এলাকায় পৌঁছালে মুন্না বাহিনীর সন্ত্রাসী হামলা চালায় এবং প্রিজন ভ্যান থেকে কামাল হোসেনকে ছিনিয়ে নিয়ে আশ্রয়শিবিরের আস্তানায় নিয়ে যায়।

প্রিজন ভ্যান থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া কামাল হোসেনকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা স্বীকার করে কক্সবাজার জেলা কারাগারের কারাধ্যক্ষ আবু মুছা প্রথম আলোকে বলেন, জামিনে মুক্তি পাওয়া তিনজন রোহিঙ্গাকে এপিবিএনের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রিজন ভ্যানটি টেকনাফের মুছনি ক্যাম্পে যাচ্ছিল। প্রিজন ভ্যান উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় পৌঁছালে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কামাল হোসেনকে ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালালেও কামালকে পাওয়া যায়নি। প্রিজন ভ্যানে থাকা অপর দুজন আসামিকে টেকনাফ মোচনী ক্যাম্পের এপিবিএনের কাছে হস্তার করা হয়েছে। কামাল হোসেনকে প্রিজন ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় উখিয়া থানায় কারাগারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় কক্সবাজার জেলা কারাগারের পক্ষ থেকে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। তবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়নি।

ওসি আরিফ হোসেন বলেন, জেলা কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানিয়েছে, কোনো আসামি জামিনপ্রাপ্ত হওয়ার পর সাধারণত আসামিদের জেলগেট থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী হওয়ায় কামাল হোসেনকে আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএনের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রিজন ভ্যানে করে পাঠানো হচ্ছিল। সন্ত্রাসী কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তারে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।