দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনে দুই ভাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. খবিরুল আহসানের কাছে তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বড় ভাই মো. মিজবাহুজ্জামান চন্দন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। আর ছোট ভাই মো. ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার ওরফে আজাদ জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাঁরা উপজেলা সদরের হিরিভিটা গ্রামের প্রয়াত চিকিৎসক মো. মমতাজুল ইসলামের ছেলে। দুই ভাই প্রার্থী হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।
মো. মিছবাহুজ্জামান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস ইন ফুড টেকনোলজি সম্পন্ন করে কানাডার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ারি ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটস অ্যান্ড লাইভলিহুডস বিষয়ে ডিপ্লোমা করেছেন। তিনি পেশাজীবী সংগঠন ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইবি) কৃষি প্রকৌশল বিভাগের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সাবেক সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন।
মো. মিজবাহুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ নিয়ে চারবার দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। স্বচ্ছ লোক হিসেবে এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসেন, পছন্দ করেন। ভোটারদের চাপে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। ভোটের মাঠে সম্পর্ক থেকে বড় হলো কথার লড়াই। একই পরিবারের অনেকেই প্রার্থী হন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সবারই স্বাধীনতা আছে। মানুষ সম্পর্কের কথা না ভেবে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা বেশি, তাঁকেই ভোট দেবেন। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
১৯৯২ সালে জাতীয় ছাত্র সমাজের পূর্বধলা ডিগ্রি কলেজের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে মো. ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদারের রাজনীতি শুরু হয়। এরপর জাতীয় ছাত্র সমাজের উপজেলা কমিটির সভাপতি, জাতীয় যুব সংহতির উপজেলার সভাপতি হন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির উপজেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছেন।
ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে রয়েছি। চারবার মনোনয়ন চেয়ে এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করছি। আশা করি, ভোটাররা আমাকেই যোগ্য হিসেবে বেছে নেবেন। বড় ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এটা তাঁর বিষয়। নির্বাচনের অধিকার সবারই আছে। তবে আমি আমার মা মনোয়ারা মমতাজকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। মায়ের আশীর্বাদ আমার ওপর রয়েছে।’
এ আসন থেকে দুই ভাইসহ মোট ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্য চারজন হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম সোহেল ফকির ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আব্দুল ওয়াহাব হামিদী।