সিলেটের কানাইঘাটে শিশু মুনতাহা আক্তার (৫) খুনের ঘটনায় চারজনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চতুর্থ) আদালতের বিচারক কাজী মো. আবু জাহের বাদল এই আদেশ দেন।
ওই চার আসামি হলেন কানাইঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়নের বীরদল ভারারিফৌদ গ্রামের শামীমা বেগম ওরফে মার্জিয়া (২৫), তাঁর মা আলিফজান বেগম (৫৫), একই গ্রামের ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগম (৩৫)। তাঁর সবাই শিশু মুনতাহার প্রতিবেশী।
মুনতাহা হত্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কানাইঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মুনতাহা সিলেটের কানাইঘাটের বীরদল ভারারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। ৩ নভেম্বর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। গতকাল রোববার ভোররাতে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা একটার দিকে মুনতাহা হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে নেওয়া হয়। বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে শুনানি শুরু হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কারা কারা জড়িত, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তের জন্য গ্রেপ্তার চারজনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় বাদীপক্ষের আইনজীবীরা শিশু মুনতাহা হত্যার বিষয়টি চাঞ্চল্যকর ঘটনা উল্লেখ করে ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য রিমান্ড দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। অন্যদিকে আসামি পক্ষের এক আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। পরে বিচারক গ্রেপ্তার চারজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে নিহত মুনতাহা আক্তারের বাবা শামীম আহমদের দায়ের করা অপহরণ মামলা হত্যা মামলার ধারা সংযোজন করার জন্য আদালতে আবেদন করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলোচিত মুনতাহা হত্যাকাণ্ড দেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বে আলোচিত হয়েছে। শিশু বাচ্চাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করে লাশ ডোবায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গ্রেপ্তারদের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছি। আদালত আমাদের পক্ষে শুনানিতে আদেশ দিয়েছেন।’
সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক জমশেদ আলম বলেন, নিহত মুনতাহার বাবা প্রথমে মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। পরে গত শনিবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। লাশ উদ্ধারের পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন করেছেন। বিচারক সেটিকে হত্যা মামলা হিসেবে আমলে নিয়েছেন।
জমশেদ আলম আরও বলেন, আদালতে আনার পর গ্রেপ্তার হওয়া কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। পরে তাঁদের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের আদেশের পর রিমান্ডের জন্য তাঁদের থানায় নেওয়া হয়েছে।