সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বর থেকে আজ বুধবার পদযাত্রা শুরু করেন
সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বর থেকে আজ বুধবার পদযাত্রা শুরু করেন

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পদযাত্রা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর দেশজুড়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এর অংশ হিসেবে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে তিনি নগ্ন পায়ে যাত্রা শুরু করেন। পরে বেলা একটার দিকে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে এর শেষ হয়।

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীরা জীবনের বিনিময়ে মুক্তির আলো দেখিয়েছে। আমাদের একটি স্বাধীনতা উপহার দিয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে সেই স্বাধীনতা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে যে নৃশংসতা চলছে, আমি এতে খুব লজ্জিত হচ্ছি। বিভিন্ন সংখ্যালঘু মানুষদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে লুটপাট করা হচ্ছে; তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। ভিন্নমতের মানুষও বাদ যাচ্ছেন না। পুলিশও এই নৃশংসতার মধ্যে পড়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

গত সোমবার দুপুরের শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এর মধ্য দিয়ে তাঁর নেতৃত্বে টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এর পর থেকেই সারা দেশে বিজয় মিছিল শুরু হয়। রাস্তায় বের হয়ে যায় হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষুব্ধ মানুষ সরকারি স্থাপনাসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলারও খবর পাওয়া যায়।

অধ্যাপক ফরিদ বলেন, ‘গভীর রাতে আমার শিক্ষার্থীরা ফোন করে জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে চুরমার করা হচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন জায়গায় হামলা হচ্ছে। আমি রাতে ঘুমাতে পারছি না। ছাত্ররা আমাদের পথ দেখিয়েছে। এটা ধরে রাখতে হবে। এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে হবে।’

কোনোভাবেই দেশে আইন হাতে তোলা যাবে না জানিয়ে ওই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই অপরাধীদের বিচার চাই। বিচারব্যবস্থা ফিরে আসবে শিগগিরই। কোনোভাবেই আইন হাতে তোলা যাবে না। আমরা চাই, বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার। যাঁরা আন্দোলন করেছেন, তাঁরাও এই বাংলাদেশ চান। বাংলাদেশের মানুষ চরম অনিরাপদে আছেন। আমরা এভাবে আর এভাবে থাকতে চাই না; অবিলম্বে শান্তি ফিরে পেতে চাই।’