রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে গত এক মাসে ৫৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। শীত থেকে রক্ষা পেতে আগুন ও গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়ে তাঁরা দগ্ধ হন। দুজনের মৃত্যুর পর এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫৪ জন দগ্ধ রোগী। এ বিষয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে হাসপাতালের পরিচালক ইউনুছ আলীর সঙ্গে।
এবারের শীত মৌসুমে এখন পর্যন্ত কতজন দগ্ধ রোগী হাসপাতালে এসেছেন?
ইউনছু আলী: ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের এখন পর্যন্ত ২০৪ জন দগ্ধ রোগী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন। তাঁদের অধিকাংশই আগুন পোহাতে গিয়ে অথবা গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন। ৩০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ১১০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৫৪ জন।
এত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো শয্যা বার্ন ইউনিটে আছে? তাঁদের চিকিৎসা কীভাবে চলছে?
ইউনুছ আলী: বার্ন ইউনিটের শয্যা পর্যাপ্ত নয়, মাত্র ১৪টি শয্যা আছে। তবে শিশু ও সার্জারি ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসার জন্য পৃথক শয্যা আছে। সেখানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ও লোকবল কি পর্যাপ্ত?
ইউনুছ আলী: চিকিৎসকসংকট আছে। মাত্র ছয়জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। আরও ছয়জন চিকিৎসক প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সীমিত জনবল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির ঘাটতি আছে।
শীতে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি নারী, পুরুষ ও শিশুর হার কেমন?
ইউনুছ আলী: এবারের শীতে আগুনে দগ্ধ রোগীর মধ্যে ৮০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ পুরুষ ও ১০ শতাংশ শিশু।
প্রতিবছর শীত এলে দগ্ধ রোগীর ভিড় বাড়ে হাসপাতালে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
ইউনুছ আলী: মাঠপর্যায়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। এ জন্য প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সবার জোরালো ভূমিকা দরকার।
হাসপাতালে দগ্ধ রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য করণীয় কী?
ইউনুছ আলী: প্রয়োজনীয় ও দক্ষ জনবল বৃদ্ধি, শয্যাসংখ্যা বাড়ানোসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। বিশেষায়িত চিকিৎসার অংশ হিসেবে পোড়া রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধসহ অন্য সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা রাখা দরকার।