প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুরে ১৯ জনকে আটক করা হয়। শুক্রবার রংপুর আদালত চত্বরে
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুরে ১৯ জনকে আটক করা হয়। শুক্রবার রংপুর আদালত চত্বরে

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ

বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষায় জালিয়াতি, আটক ২২

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুর ও নীলফামারীর সৈয়দপুরে ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার সময় সৈয়দপুরে তিনজন পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষা আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭।

আজ সকালে রংপুর মহানগরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র ও এলাকা থেকে পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ১৯ জনকে আটক করে পুলিশ। দুপুর ১২টায় রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিয়োগ পরীক্ষায় ‘বিটু এক্স ডিভাইস’ ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রের উত্তর দেওয়ার চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রস্তুতির প্রাক্কালে পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন পরীক্ষার্থী, তাঁদের আটজনই নারী। বাকিরা কলেজশিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। আটক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়। তবে আটক ব্যক্তিদের নাম জানানো হয়নি।

পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, একটি অসাধু চক্র ডিজিটাল ডিভাইসের অপব্যবহার করে জালিয়াতি কাজের সঙ্গে জড়িত। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকে পরীক্ষার আগের রাতে, সকালে ও পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্র থেকে আটক করেছে। তাঁদের আটক করায় চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি বলে তিনি দাবি করেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর বিভাগের উপপরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সৈয়দপুরে ৩ পরীক্ষার্থী আটক
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৩ পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। সকালে পরীক্ষা চলাকালে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, কয়া গোলাহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজকেন্দ্র থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

সৈয়দপুর থানা-পুলিশ জানায়, তিন পরীক্ষার্থী ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহার করে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে কেন্দ্রসচিবকে জানান। কেন্দ্রসচিব তাঁদের কেন্দ্রে কর্তব্যরত পুলিশের হাতে তুলে দেন।

আটক পরীক্ষার্থীরা হলেন নীলফামারী সদর উপজেলার কচুকাটা এলাকার আপন চন্দ্রের ছেলে তমাল চন্দ্র (২৫), একই উপজেলার পঞ্চপুকুর এলাকার হামিদুল ইসলামের মেয়ে রাফিয়া আকতার (২৩) ও ডিমলা উপজেলার পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের মুসা মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক (২৭)।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম কেন্দ্র থেকে তিন পরীক্ষার্থী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আটক পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।