সিলেট নগরের শেখঘাট তেলিহাওর এলাকার অস্থায়ী ঠিকানায় ২০১২ সালে নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস গোলাপগঞ্জের হেতিমগঞ্জে। অর্ধশতাধিক স্থায়ী ও খণ্ডকালীন শিক্ষক এখানে কর্মরত আছেন। শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আছে সমৃদ্ধ পাঠাগারও। বর্তমানে ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা শেষ করে কৃতী শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও পাঁচটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে।
প্রথম আলো: সিলেটে উচ্চশিক্ষার প্রসার ও বিস্তরে আপনাদের প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা কেমন?
উপাচার্য: নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী সন্তানদের স্বল্প খরচে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে অনেক শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশে চাকরি করছেন।
প্রথম আলো: আপনাদের প্রতিষ্ঠানটিকে কেন অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা মনে করেন? আপনাদের প্রতিষ্ঠান কতটুকু শিক্ষার্থীবান্ধব?
উপাচার্য: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষকের চেষ্টায় সিলেটে প্রথম অনলাইনে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন করার বিষয়টি নিজস্ব ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়েছে। এখানে
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. শহিদুর রহমান সিএসই বিভাগের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনসহ দুটি কোর্স
পড়াচ্ছেন। অধ্যাপক সাবিরা খাতুন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন অনলাইনে। দেশের স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ মোহম্মদ কায়কোবাদ প্রায়ই এসে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিয়ে থাকেন। এভাবে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকের মাধ্যমে ছয়টি বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে।
প্রথম আলো: শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নের বিষয়ে আপনাদের পদক্ষেপ কী কী?
উপাচার্য: শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নে আমরা বদ্ধপরিকর। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তাই গবেষণাকাজে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে নিয়মিত উৎসাহ দেওয়া হয়। সভা–সেমিনারও আয়োজন করা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জার্নাল নিয়মিত প্রকাশিত হয়। এসব জার্নালে লেখা প্রকাশের আগে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া হয়। শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে আইকিউএসি কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব এবং মানসম্মত একটি লাইব্রেরি আছে।
প্রথম আলো: সহশিক্ষা কার্যক্রমকে আপনারা কেমন উৎসাহিত করেন?
উপাচার্য: সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন নামে সংগঠন রয়েছে। যেমন স্পোর্টস ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, কসমিক রে ইত্যাদি। এ ছাড়া প্রতিটি বিভাগের নিজস্ব ছাত্রসংগঠন রয়েছে। সেসব ক্লাব বা সংগঠনকে নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করা হয়। মোটকথা, একজন শিক্ষার্থী যেন সঠিকভাবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানবিক মানুষ হিসেবে কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে পারেন, সেটি নিশ্চিতেই পাঠদানের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমকেও সমানভাবে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে।
প্রথম আলো: আপনার মেয়াদকালে বিশ্ববিদ্যালয়কে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান?
উপাচার্য: নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত
করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। সে লক্ষ্যেই আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি। আমরা সব
সময়ই দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকি। এ ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার
গুণগত মান বজায় রাখার সব সময় চেষ্টা করা হয়। ভবিষ্যতেও সেটির ধারবাহিকতা ঠিক রাখার প্রচেষ্টা চলবে।