ময়মনসিংহ নগরে ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বাবুর (৩২) মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনার আট দিনের মাথায় আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫।
কামরুল হাসান নগরের খাগডহর মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি ফিলিং স্টেশনে এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী ছিলেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় কামরুলের স্ত্রী সুমি আক্তারও (৩০) দগ্ধ হন। সংকটাপন্ন অবস্থায় তিনি একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই দম্পতির তিন কন্যাসন্তান আছে।
কামরুলের বাবা আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেকে অনেক বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু বাঁচানো গেল না, আজ সকালে আমার ছেলে মারা গেছে। যাদের গাফিলতির কারণে আমার ছেলে মারা গেল, তাদের বিচার চাই।’
৪ নভেম্বর বেলা পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কে রহমতপুর বাইপাস এলাকায় আজহার ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাতটি গাড়ি পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলেই প্রাইভেট কারের চালক হিমেল আহমেদ (৩২) মারা যান। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিসমত গ্রামের বৃদ্ধ আবদুল কদ্দুস (৮৫) ও ঢাকায় নেওয়ার পথে হারগুজিরপাড় গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের (৪৫) মৃত্যু হয়। ৬ নভেম্বর সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তোফাজ্জল হোসেন (৪৫)।
এ ঘটনায় ৬ নভেম্বর হিমেল আহমেদের মা ইয়াসমিন হেনা বাদী হয়ে ফিলিং স্টেশনটির মালিক আজহারুল ইসলামসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা অপর ছয়জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার মামলা করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তদন্ত কমিটি কাজ করতে না পারায় আরও পাঁচ কর্মদিবস তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।