নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ২ আসামি ১৭ বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ রোববার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল দ্বিতীয় আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে চলতি বছরের ১২ জুন আসামিদের অনুপস্থিতিতে আদালত তাঁদের সাজা দেন। তাঁরা হলেন মামলার প্রধান আসামি টুললু মাহমুদ (৪২) ও তাঁর সহযোগী জোবেদা বেগম ওরফে ভেকরী (৪৯)। টুললু উপজেলা শহরের দক্ষিণ রাজীর গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে ও জোবেদা একই গ্রামের মামুন রশীদের স্ত্রী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ উপজেলা শহরের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করেন টুললু ও জোবেদা। ঘটনার দুই দিন পর ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে টুললু, জোবেদাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলা করার তিন দিন পর অক্ষত অবস্থায় অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ মে টুললু ও জোবেদাকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরুল হুদা। সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় অন্য চার আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।
আদালতের বিশেষ সরকার কৌঁসুলি আল মাসুদ আলাল বলেন, মামলায় পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১৭ বছর পর ২০২২ সালের ১২ জুন আসামিদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে প্রধান আসামি টুললুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তাঁর সহযোগী জোবেদাকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আল মাসুদ আলাল আরও বলেন, ২০০৫ সালে মামলা করার পর থেকে দুই আসামি পলাতক ছিলেন। রায় ঘোষণার পাঁচ মাস পর আজ দুপুরে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তাঁরা। আদালতের বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।