রুমায় কেএনএর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেপ্তার

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার সাংবাদিক লোঙা খুমি। শুক্রবার বিকেলে বান্দরবান আদালতে
ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে লোঙা খুমি (৪০) নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লোঙা খুমি একটি দৈনিক পত্রিকার রুমা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। সশস্ত্র হামলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হত্যার ঘটনায় জানুয়ারি মাসে দায়ের করা দুটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, কেএনএর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকায় লোঙা খুমিকে জানুয়ারিতে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাংবাদিক লোঙা খুমির স্ত্রী রনি খুমি প্রথম আলোকে বলেন, সকালে নাশতা করে লোঙা খুমি বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে গিয়েছিলেন। বাজার থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি দল তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। লোঙা একসময় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে (কেএনডিও) কাজ করতেন। পরে সংগঠনটি কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) হওয়ার পর তিনি ওই সংগঠন ছেড়ে দেন।

রুমা প্রেসক্লাবের সভাপতি শৈহ্লাচিং মারমা বলেন, লোঙা খুমি রুমা প্রেসক্লাবের সদস্য হননি। নতুন সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও সংগঠনটির সশস্ত্র শাখা কেএনএর সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।

লোঙা খুমিকে সকাল সাড়ে নয়টায় নিরাপত্তা বাহিনী থানায় হস্তান্তর করে। থানা থেকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর দুপুরে বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।

লোঙা খুমিকে আদালতে হাজির করার সময় পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, নাথান বমের (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ প্রধান) নির্দেশে কেএনএ ২৭ জানুয়ারি পাইন্দু ইউনিয়নের মুন্নুয়ামপাড়া সেনা ক্যাম্পে হামলা করে। সেখানে কয়েকজন সেনাসদস্য আহত হন। পরের দিন ২৮ জানুয়ারি বাসাত্লাংপাড়া এলাকায় কেএনএ নিরাপত্তা বাহিনীর টহল দলের ওপর আবার হামলা করে। সেখানে বেশ কয়েকজন সেনাসদস্য আহত হন। ওই ঘটনার তদন্তে লোঙা খুমির জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। একইভাবে তিনি কেএনএ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত রয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

লোঙা খুমিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক সৈয়দা সুরাইয়া আক্তার তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) বিশ্বজিৎ সিংহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।