আঙুলের ছাপ জটিলতায় বেতন কাটার প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে প্রধান কার্যালয় নগরভবন ঘেরাও করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটায় নগরের টাইগারপাসে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ের দুটি প্রবেশফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
বিক্ষোভের সময় প্রধান কার্যালয়ের ভেতরে সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবস্থান করছিলেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কার্যালয়ের ভেতরে কাউকে ঢুকতে বা ভেতর থেকে কাউকে বাইরে যেতে দিচ্ছিলেন না।
কর্মসূচিতে প্রায় ৩০০ শ্রমিক অংশ নিয়েছেন। তাঁরা কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান করে দাবির পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের চার দফা দাবি হলো প্রথমত, আঙুলের ছাপ জটিলতায় যাঁদের বেতন কাটা গেছে, তা ফেরত দিতে হবে এবং বেতন কাটার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে কর্মরত অস্থায়ী শ্রমিক-পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে স্থায়ী করতে হবে। তৃতীয়ত, ডোর টু ডোর (বাসাবাড়ি থেকে সরাসরি গৃহস্থালি বর্জ্য সংগ্রহ) প্রকল্পের আওতায় নিয়োগ পাওয়া শ্রমিকদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে। চতুর্থত, অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের সন্তানদের চাকরি দেওয়া এবং তাঁদের বকেয়া পাওনা দুই মাসের মধ্যে শোধ করতে হবে।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের নেতা রাজীব মেথর প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা মাসের প্রতিদিন ঝড়বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে চাকরি করেন। ময়লা পরিষ্কারের মতো কঠিন কাজে কেউ ফাঁকি দেন না। তারপরও তাঁদের কারও দুই দিন, কারও পাঁচ দিনের বেতন কাটা গেছে। কারও কারও পুরো মাসের বেতন পর্যন্ত কাটা গেছে। মেশিনে আঙুলের ছাপ না থাকায় এভাবে বেতন কাটা হচ্ছে। অথচ সবাই নিয়মিত কাজ করছেন। তিন মাস ধরে এ অবস্থা চলছে। তাঁরা অল্প টাকা বেতন পান। এভাবে যদি টাকা কেটে ফেলা হয়, তাহলে চলবে কী করে। তাই নিরুপায় হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। দাবি না মানলে কাজ বন্ধ রেখে লাগাতার কর্মবিরতির কর্মসূচি দেবেন তাঁরা।
তবে কাজে অনুপস্থিত থাকায় বেতন কাটা হয়েছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের আঙুলের ছাপ মেলে না, তাঁদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। কাজে উপস্থিত থাকার পরও কারও বেতন কাটা হয়েছে, এমন অভিযোগ সত্য নয়।