রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর নিজ বাসার কাছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তানভীর শেখকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে কাজল (২১) ও নতুনবাজার এলাকার সামাদ শেখের ছেলে রহিম শেখ (৩০)।
এ ঘটনায় আজ দুপুরে নিহত তানভীরের মামা আলম শেখ বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতানামা কয়েকজনকে আসামি করে ওই মামলা হয়।
রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশ জানায়, তানভীর শেখ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে জেলার গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও থানা–পুলিশের একাধিক দল শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বিকেলে প্রথমে এ ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি কাজলকে শহরের বিনোদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ৮ নম্বর আসামি রহিমকে শহরের বড়পুল এলাকা থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নিজ বাসা থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে বিনোদপুর সার্বজনীন মন্দির ও স্থানীয় মুন্নাফের দোকান–সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে তানভীর তার দুই বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল। ১০-১২ জন তরুণ আকস্মিকভাবে এসে ওই দুই বন্ধুর গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তানভীরের পেটে ও পিঠে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এতে তানভীর মাটিতে লুটে পড়লে দুর্বৃত্তরা দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন।
তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন সেখানে ছুটে এসে তানভীরকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, দুই-তিন মাস আগে তুচ্ছ একটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তানভীরের বিরোধ তৈরি হয়। ওই বিরোধের জের ধরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় দুই থেকে তিনজন এবং দ্বাদশী ইউনিয়নের ছয় থেকে সাতজন অংশ নিয়েছেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুকিত সরকারসহ তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় হওয়া মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছেন।