রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হল ভবনের মিলনায়তনের একটি অংশ ধসে পড়ার ঘটনায় নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ অভিযান চালায় রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের দুদকের চার সদস্যবিশিষ্ট একটি দল।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী অভিযান শেষে বেলা সোয়া দুইটার দিকে কার্যালয়টির সহকারী পরিচালক মো. আমির হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছেন। মূলত কমিশনের ১০৬ হটলাইন নম্বরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা অভিযান চালান। অভিযানে তাঁরা ভবনসংক্রান্ত সব নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে ভবন নির্মাণকাজে অসংগতি ও অনিয়ম পেয়েছেন। এরপর তাঁরা ভবনধসস্থল পরিদর্শন করবেন। পরবর্তী সময়ে সব আলামত কমিশনের কাছে জমা দেওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ৩০ জানুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের সামনে নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের মিলনায়তনের একাংশ ধসে পড়ে। এ ঘটনায় নয়জন আহত হয়েছিলেন। ওই দিন রাতেই জরুরি সভা ডেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে তদন্ত কমিটির সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে আরও সাত কার্যদিবস সময় বাড়ানো হয়।
দ্বিতীয় দফার সময় শেষ হওয়ার আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নির্মাণকাজে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার ও আহত শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩০তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান আবাসিক হল ও ২০ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ করছে রূপপুরের ‘বালিশ-কাণ্ডে’ আলোচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ওই দুই ভবনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।