মারধরের পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছাত্রদল নেতা পাভেল মিয়াকে রূপগঞ্জের কাঞ্চনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন
মারধরের পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছাত্রদল নেতা পাভেল মিয়াকে রূপগঞ্জের কাঞ্চনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন

রূপগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মারধরে ছাত্রদল নেতা নিহত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি নেতা–কর্মীদের মারধরে পাভেল মিয়া (৩০) নামের ছাত্রদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে বিএনপির এক নেতা ও তাঁর অনুসারীদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত পাভেল কাঞ্চন পৌরসভা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক। তিনি পৌরসভার কৃষ্ণনগর এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে।

নিহত পাভেল মিয়া

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বিএনপি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাতে শুভ নামের পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার সঙ্গে কাঞ্চন পৌর সেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামের কথা–কাটাকাটি হয়। এর জেরে শুভর পক্ষ নিয়ে আমিনুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে তর্কে জড়ান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বায়জীদ। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পরস্পরকে কাঞ্চন পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে আসতে বলে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. বায়জীদ, তাঁর অনুসারী জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন আমিনুল ইসলামকে খুঁজতে পৌরসভার সামনে আসেন। এ সময় পৌর কার্যালয় এলাকায় একটি মন্দিরের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন পাভেল মিয়া। এ সময় একা পেয়ে দলবল নিয়ে পাভেলকে মারধর করেন বায়জীদ। পরে স্থানীয় লোকজন পাভেলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক পাভেলকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে রাতে পাভেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাঁর অনুসারী ও এলাকার লোকজন বায়জীদ, জাহাঙ্গীর ও শুভর বাড়িঘরে হামলা চালান এবং তিনটি টিনের ঘরে আগুন দেন। পরে কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

নিহত পাভেলের বড় ভাই পৌরসভা বিএনপির নেতা শাহিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আমি নিজে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। আজ বুধবার সকালে দলের নেতাদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলেছিলাম। কিন্তু বায়জীদ আমাকে উপেক্ষা করে দলবল নিয়ে আমিনুলকে খুঁজতে পৌরসভার সামনে আসেন। সেখানে তাঁরা পাভেলকে একা পেয়ে হত্যা করেন।’

এ বিষয়ে জানতে বায়জীদ ও শুভর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের এলাকায় পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নেতাদের হামলায় ছাত্রদল নেতা পাভেল নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত বিএনপি নেতার ঘরসহ তিনটি ঘরে আগুন দিয়েছেন। বাড়িতে কেউ না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রাত থেকেই এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।