কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার পর ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা–সিলেট ও ঢাকা–কিশোরগঞ্জ—এই তিন পথে পাঁচ ঘণ্টা ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। পথে পথে আটকে আছে বেশ কিছু যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন।
আজ সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে যাত্রীবাহী এগারসিন্দুর ট্রেনকে পেছন থেকে মালবাহী একটি ট্রেন ধাক্কা দিলে যাত্রীবাহী ট্রেনের দুটি বগি উল্টে যায়। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও পরিচালক (গার্ড)—এই তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সফিকুল ইসলাম।
সফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ইতিমধ্যে উদ্ধারকারী ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
দুর্ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। চার সদস্যবিশিষ্ট অপর তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে আছেন ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা।
এদিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত আহত ৭০ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। ২১ জনকে ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার্থে পাশের কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আরও চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় ওষুধ আনা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মালবাহী ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল আর যাত্রীবাহী এগারসিন্দুর ট্রেনটি যাচ্ছিল ভৈরব থেকে ঢাকার দিকে। ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের শেষ দুই বগিতে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এ সময় যাত্রীবাহী ট্রেনের দুটি বগি উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন।