কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এক শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সহছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানাসহ (৪৮) তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকের দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করে গতকাল সোমবার বিকেলে পুলিশ তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। তবে এখনো অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এক শিক্ষার্থীর নামে একাধিক আবেদন থাকায় ভর্তি বাতিলের কারণ জানতে গত রোববার কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে আসেন মাসুদ রানা। সেখানে তিনি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকীর (৫৩) ওপর চড়াও হন তিনি। তাঁকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের এক কোনায় নিয়ে গিয়ে কিলঘুষি মারেন। পরে শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকী বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় মাসুদ রানাসহ চারজনের নাম ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের কথা উল্লেখ করে অভিযোগ করেন। পুলিশের তদন্ত শেষে গতকাল বিকেলে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। মামলায় বিএনপি নেতা মাসুদ রানার পাশাপাশি অন্য তিন আসামি হলেন তাঁর সহযোগী রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও বিদ্যুৎ।
মারধরের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নেতার এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ ও মারধরের ঘটনায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা ও সঠিক বিচার চেয়ে রোববার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে তাঁর ওপর আক্রমণের চিত্র দেখেছে। তিনি সঠিক বিচারের আশায় আছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাসিবুর রহমান বলেন, শিক্ষকের সঙ্গে মাসুদ রানার অসৌজন্যমূলক আচরণের কথা শুনেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, শিক্ষকের দেওয়া অভিযোগটি গতকাল মামলা আকারে নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিএনপি নেতা মাসুদ রানাসহ আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে ২১ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা মো. রোকনুজ্জামান রোকনের (৪০) বিরুদ্ধে এক প্রধান শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়। রৌমারী সিজি জামান উচ্চবিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। পরে মারধরের শিকার শিক্ষক মো. নুরুন্নবী (৪১) থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, রৌমারীতে শিক্ষক পেটানোর ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান ও কুড়িগ্রাম সদরে বিএনপি নেতা মাসুদ রানার নামে নিজ নিজ থানায় মামলা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের সব ইউনিট কাজ করছে। আশা করছেন, খুব দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন।