শেখ হাসিনার ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের দায় সংবাদমাধ্যম এড়াতে পারে কি না, প্রশ্ন তুলেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘এটার দায় কি শুধু শেখ হাসিনার? নাকি দায় সবার, নাকি দায় যারা চুপ করেছিল। সেই দায় যদি আমি হিসাব করতে যাই, সেই দায়ের মধ্যে তো সংবাদমাধ্যমও আছে। সংবাদমাধ্যম কি দায় এড়াতে পারবে, যে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা ছিল না? এটা কি সংবাদমাধ্যম বলতে পারবে?’
আজ শুক্রবার বিকেলে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে কেমন সংবাদমাধ্যম চাই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন ও রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গে এনে সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে সংবাদ সম্মেলনের নামে সার্কাস দেখতাম, সেখানে সব তথাকথিত সম্পাদকেরা গিয়ে যে ভাষায় কথা বলতেন এবং আমরা অবাক হয়ে শুনতাম—এ রকম মেরুদণ্ডহীন ব্যক্তি সম্পাদক হতে পারে পত্রিকা–টেলিভিশনের এবং তাঁরা নির্লজ্জভাবে এক ব্যক্তির স্তুতি করে যাচ্ছেন সেখানে।’
পুরো সংবাদমাধ্যম করপোরেট দুনিয়ার কাছে বন্দী হয়ে গেছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘কালোটাকার মালিক, দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি, ব্যবসায়িক ও রাজনীতিবিদ—তাঁদের যে দুর্নীতি, এটাকে জায়েজ করার জন্য গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন। যাঁর যাঁর ব্যবসায়িক স্বার্থ সেটাকে সমর্থন করার জন্য বা সে স্বার্থকে উদ্ধার করার জন্য সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আবু সাঈদ ও তাঁর মতো অসংখ্য শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জনগণের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পেয়েছি।’
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। অন্যদের মধ্যে আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, রংপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভা সঞ্চালনা করেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান।