দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে শুরু করা হানিফ বাংলাদেশির কর্মসূচি শেষ

আট মাসে ১৬০ কর্মদিবসে ৪৯৫টি উপজেলা ও ৬৪টি জেলা ঘুরে আজ পঞ্চগড়ে এই স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি শেষ করেছেন হানিফ বাংলাদেশি
ছবি: প্রথম আলো

দুর্নীতি-দুঃশাসন, অর্থ পাচার ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে দেশের ৬৪ জেলা ও ৪৯৫টি উপজেলা ঘুরে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি শেষ করেছেন হানিফ বাংলাদেশি।

আজ বুধবার সকাল থেকে তিনি দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন। এরপর জেলা প্রশাসকের হেল্প ডেস্কে স্মারকলিপি জমা দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন।

গত বছরের ৫ জুন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন হানিফ বাংলাদেশি। প্রতিদিন তিন থেকে চারটি উপজেলা প্রদক্ষিণ করতেন। আট মাসে ১৬০ কর্মদিবসে ৪৯৫টি উপজেলা ও ৬৪টি জেলা ঘুরে আজ এই স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি শেষ করেছেন তিনি। তিনি ঘুষ-দুর্নীতি, অর্থ পাচার রোধ এবং ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসনের মান উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।

রাষ্ট্রের নানা অনিয়ম, অসংগতির বিরুদ্ধে ৬৪ জেলায় এবারসহ চতুর্থবার এবং ৪৯৫টি উপজেলা প্রথমবার প্রদক্ষিণ করলেন হানিফ বাংলাদেশি। নোয়াখালীর জাহানাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মান্নানের ছেলে মো. হানিফ পরিচিত হানিফ বাংলাদেশি নামেই। ১৯৯৯ সালে নোয়াখালীর বুলুয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি। পরে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠানে কমিশন এজেন্টের কাজ নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে এই প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।

কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছেন হানিফ বাংলাদেশি। তিনি বলেন, দেশে সামাজিক, পারিবারিক ও মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় চলছে। ভোট, গণতন্ত্র, আইনের শাসনের ওপর আগের সরকারের সময় থেকে নগ্ন হস্তক্ষেপ শুরু হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার হয়েছে। দেশের কৃষকেরা উৎপাদনশীল, শ্রমিকেরা পরিশ্রমী, ছাত্র-যুবকেরা মেধাবী। কিন্তু দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি সব অর্জনকে ব্যাহত করছে।

দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হলেও মানবিক মূল্যবোধের পতন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন হানিফ বাংলাদেশি। তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে, চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচার করা অর্থ ফেরত এনে যুবকদের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে তাঁদের। ভোট, গণতন্ত্র, আইনের শাসনের মানোন্নয়নে আরও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।