ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিষপানে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে শহরের ভাদুঘর এলেমপাড়ার বাসা থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বিষপানে গুরুতর অসুস্থ গৃহবধূর দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মৃত গৃহবধূর স্বজনদের ভাষ্য, সৌদি আরবপ্রবাসী স্বামীর সঙ্গে কলহের জের ধরে তিনি দুই মেয়েকে বিষ পান করান। এরপর তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেন।
মৃত আইরিন আক্তার (৩২) শহরের ভাদুঘর এলাকার সৌদি আরবপ্রবাসী শামীম মিয়ার স্ত্রী। এ দম্পতির দুই মেয়ে তোবা আক্তার (৬) ও সাবা আক্তারকে (২) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আইরিন আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের লালফুর গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে। প্রায় আট বছর আগে শামীম ও আইরিনের বিয়ে হয়।
আইরিনের ভাই রাহিম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই লাখ টাকা খরচ করে ভগ্নিপতি শামীমকে সৌদি আবরে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে তাঁকে আরও সাড়ে চার লাখ টাকা ধার দিই। সৌদি আরবে আমার দোকান বিক্রি করে দেশে চলে আসি। টাকা ফেরত ও দোকান কেনা নিয়ে আইরিনের সঙ্গে শামীমের কলহ চলছিল। শামীমের পরিবারের লোকজন প্রায়ই আমার বোনকে আত্মহত্যা করার কথা বলত। সৌদি আরব থেকে শামীম মুঠোফোনে আমার বোনকে গালিগালাজসহ মানসিক নির্যাতন করতেন।’
রাহিম মিয়া আরও বলেন, সংবাদ পেয়ে বোনের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখেন খাটের ওপর আইরিনের লাশ পড়ে আছে। পাশে দুই ভাগনি মুমূর্ষু অবস্থায়। ওই পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিলেন না। দুই ভাগনিকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ভগ্নিপতি শামীম, তাঁর বাবা মুছলেম মিয়া, বোন লাইলি বেগম ও ভাই ছাদেক মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন ভূঁইয়া জানান, দুই শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আগের চেয়ে তাঁদের উন্নতি হয়েছে। তবে তারা এখনো শঙ্কা মুক্ত নয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে ওই গৃহবধূর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রাতেই তাঁর লাশ বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।