কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির
কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির

উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা

কক্সবাজারের উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৪-বর্ধিত) নূর মোহাম্মদ (৩১) নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার ভোররাতে ওই আশ্রয়শিবিরের ডি-৪ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নুর মোহাম্মদ ডি-৪ ব্লকের রোহিঙ্গা অলি আহমেদের ছেলে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা নুর মোহাম্মদকে হত্যা করে বলে সন্দেহ পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের। নুর মোহাম্মদ ওই আশ্রয়শিবিরের রাত্রিকালীন পাহারা দলে কাজ করতেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ভোররাতে নূর মোহাম্মদকে জবাই করে হত্যা করে আশ্রয়শিবিরের পাশের এ ব্লকের একটি পাহাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে ওই রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। আজ সকালে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানায় পুলিশ।

আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা জালাল আহমদ বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে রোহিঙ্গারা একদিকে ভূমিধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় থাকেন, অন্যদিকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর খুন-অপহরণ আতঙ্কে থাকেন। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার রাতে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয় শিবিরে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, গত জুন মাসে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় ৯ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। চলতি সালের গত ছয় মাসে সশস্ত্র গোষ্ঠীর গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে ২৬ জন রোহিঙ্গা। বর্তমানের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ সাত বছরেও একজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।