ফরিদপুর–৪ আসনে আবারও মুখোমুখি জাফর উল্যাহ ও নিক্সন চৌধুরী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনে আবারও মুখোমুখি হয়েছেন সারা বছর বাগ্‌যুদ্ধে সরব থাকা কাজী জাফর উল্যাহ ও মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। এর মধ্যে প্রথমজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী এবং আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ নিয়ে তাঁরা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কাজী জাফর উল্যাহ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। আর মজিবুর রহমান ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবং যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের নভেম্বরে মজিবুর রহমান যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছিলেন। কিন্তু পরপর দুইবার পরাজিত হওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত কাজী জাফর উল্যাহকেই মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।

এই দুই নেতা প্রথম মুখোমুখি হন ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে কাজী জাফর উল্যাহকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করেন পাশের মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া মহল্লার বাসিন্দা রাজনীতিতে নতুন মুখ মজিবুর রহমান। কাজী জাফর উল্যাহ বরাবরই আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ, তথা ‘হেভিওয়েট’ নেতা। মজিবুর রহমানের মতো নতুন এক ব্যক্তির কাছে কাজী জাফর উল্যাহর হার তাই সারা দেশে চমক সৃষ্টি করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও দুই নেতা আবার মুখোমুখি হন এবং ফলাফল অপরিবর্তিত থাকে।

ফরিদপুর-৪ আসনের অধীন এলাকার রাজনৈতিক সচেতন কয়েকজন বলেন, ২০১৪ সালে মজিবুর রহমান চৌধুরী ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসনে তাঁর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা-কর্মীদের তাঁর দলে ভেড়ানো, তাঁর সমর্থকদের স্থানীয় বিভিন্ন নির্বাচনে জিতিয়ে আনা, এমনকি হামলা–মামলা দিয়ে পুলিশের সহায়তায় তাঁর দল ভারী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মজিবুর রহমান-কাজী জাফর উল্যাহর মধ্যে বাগ্‌যুদ্ধ দেড় বছর ধরে চলছে। প্রথম দিকে মজিবুর রহমান জনসভায় কাজী জাফর উল্যাহকে সমালোচনা করে নানা ধরনের বক্তব্য দিলেও তাঁকে (জাফর উল্যাহ) প্রতিক্রিয়া জানাতে সেভাবে দেখা যায়নি। তবে ছয় মাস ধরে একজন মন্তব্য করলে আরেকজন পাল্টা মন্তব্য করছেন। সম্প্রতি কাজী জাফর উল্যাহর এলাকায় এক দলীয় জনসভায় বলেছেন, মজিবুর রহমান ২০১৪ সালে যখন এ আসনে নির্বাচন করেন, তখন এ এলাকায় তাঁর কোনো জমি ছিল না। অথচ বর্তমানে তিনি ১ হাজার ১০০ বিঘা জমির মালিক। কাজী জাফর উল্যাহর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মজিবুর রহমান বলেন, তিনি ১ হাজার ১০০ বিঘা নয়, ২ হাজার বিঘা জমির মালিক। তিনি জাফর উল্যাহর মতো দুর্বল (ফকিন্নির ছেলে) নন। ওই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কাজী জাফর উল্যাহ বলেছেন, মজিবুর রহমান একজন ডাকাত, গুন্ডা, বালুখেকো। আবার নির্বাচিত হলে তিনি মানুষ চিবিয়ে খাবেন। কাজী জাফর উল্যাহর এই মন্তব্যের জবাবে মজিবুর রহমান বলেন, কাজী জাফর উল্যাহ নির্বাচিত হলে জনগণের টাকা লুট করে পানামা ব্যাংকে পাঠাবেন।