চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন ও দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে মামলাটি করেন ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ মেহেদী হাসান নামের এক ব্যক্তি। মেহেদী হাসান বিএনপি নেতা ইসহাক কাদের চৌধুরীর গাড়ি চালক।
মামলায় সাবেক দুই সংসদ সদস্য ছাড়া পৌরসভার দুজন কাউন্সিলর, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে আবদুল হান্নান (৪৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বাড়ি উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের নিউ রাজাপুর এলাকায়।
মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী ও তাঁর ভাই ইসহাক কাদের চৌধুরীর বাড়িঘরে হামলা, লুট ও বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে ভাটিয়ারি ইউনিয়নের জলিল গেট এলাকায় আসামিরা ইসহাক কাদের চৌধুরীর বাড়ি ভাঙচুর করে লুটপাট চালান। এ সময় তাঁরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান।
এর আগে গত শনিবার রাতে উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. অহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ জনসহ মোট ১৩৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সাবেক দুই সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন ও দিদারুল আলমকে আসামি করা হয়। এ মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন জেলা পরিষদ সদস্য আ ম ম দিলশাদ, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফুল আলম চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মহিউদ্দিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া, সলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ, ভাটিয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মনির আহমেদ, কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী, বাড়বকুণ্ড ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী, পৌরসভার কাউন্সিলর বদিউল আলম, দিদারুল আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এস এম রিয়াদ প্রমুখ।
দিদারুল আলম পরপর দুই মেয়াদে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সীতাকুণ্ডের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে এস এম আল মামুন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জানতে চাইলে মামলার আসামি বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ওই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি নিশ্চিত মামলার বাদী তাঁকে চেনেনও না। তিনিও বাদীকে চেনেন না। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে। দুটি মামলার কোনো ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে আসামি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সীতাকুণ্ডের দুই সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন ও দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি নথিবদ্ধ হওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।